২০২৩ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে একের পর এক সংলাপ করে যাচ্ছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। তার ভাষায় আস্থার সংকট কাটিয়ে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে চান তিনি। আজ ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সম্পাদক ও সাংবাদিকদের সাথে সংলাপে তিনি এ কথা বলেছেন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গতিপ্রকৃতি কেমন হবে তা নিয়ে দেশে-বিদেশে বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের আগ্রহের শেষ নেই। দেশে বহুদিন ধরে শক্তিশালী বিরোধী দল না থাকায় ক্ষমতাসীন দলের ইচ্ছা অনিচ্ছায় বলতে গেলে সবকিছু চলছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও শক্তিশালি বিরোধী দলের অভাবের কথা উল্লেখ করেছেন। সব মিলিয়ে নানা কারণে বেশ গুরুত্ব পাচ্ছে আগামী নির্বাচন।
বিভিন্ন মানবাধিকার ও গণতন্ত্র বিষয়ক প্রতিবেদনে বিগত দিনের নির্বাচনগুলো বেশ প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এবং চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক রাজনীতির গতিপ্রকৃতির পরিবর্তন হয়েছে। আগামী দিনে এর প্রভাব বাংলাদেশের রাজনীতিতে পড়তে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। এ কারণে আগামী বছর অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচন হতে পারে অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে আরও বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতামুখর। এসব প্রেক্ষাপটে একটি শক্তিশালী ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশনের প্রয়োজন দেখা দিচ্ছিল বর্তমান কমিশন তৈরির আগে থেকেই, অন্যান্য বারের চেয়ে বেশি আগ্রহ ছিল কমিশন গঠন প্রক্রিয়া নিয়েও।
কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নিয়েই সংলাপের আয়োজন করে। এর আগে শিক্ষাবিদ ও বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে দুদফায় সংলাপ করেছে ইসি। গণমাধ্যমের সঙ্গে বসেছেন একাধিকবার, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও কথা বলছেন। এরসবই ইতিবাচক বলে আমরা মনে করি। তবে আমরা এও মনে করি, সংলাপে বসার আগে কিছু নির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থির করে আলোচনা বা পর্যালোচনায় বসলে তা বেশি কার্যকর ফল বয়ে আনবে।
দীর্ঘবছর বর্তশান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রক্ষমতায় আছে, ভাল-মন্দ মিলিয়ে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশকে এগিয়ে নিতে তারা কাজ করছে। দৃশ্যমান বহু উন্নতি হয়েছে তাদের এই লম্বা দায়িত্ব পালনের সময়ে। তবে দেশের গণতন্ত্রের অন্যতম উপকরণ ‘ভোট ও নির্বাচন’ বিষয়ে জনগণের আস্থার বিচ্যূতি ঘটেছে বললে ভুল হবে না। এই জায়গায় জনআস্থা ফিরিয়ে আনতে তাদের করণীয় দায়িত্ব অনেক, সেইসঙ্গে ক্ষমতার বাইরে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে সমান তালে। তাহলেই হয়তো ধীরে ধীরে ভোট ভিত্তিক গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে পারবে নির্বাচন কমিশন।