রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকার নিশ্চুপ দাবি করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই সমস্যা সমাধানে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়া সরকার মানবিক ও কূটনৈতিক দিক থেকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ের বিষয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
শুক্রবার সকালে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর হত্যাযজ্ঞ বন্ধ ও বাংলাদেশে তাদের আশ্রয়দানের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি এমন এক সময়ে এ ধরনের অভিযোগ করছেন যখন স্রোতের মতো রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে প্রবেশ করছে, সরকারও মানবিক দিক বিবেচনা করে আশ্রয় দেয়ার জন্য বিভিন্ন উপায় খুঁজছে এবং একইসঙ্গে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর উপায়ও খুঁজছে।
মানববন্ধনে ফখরুল বলেন, বিশ্ববাসী যখন রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিমদের হত্যা, নির্যাতন ও নিজেদের বসত বাড়ি থেকে উৎখাতের বিরুদ্ধে সোচ্চার তখন বাংলাদেশ সরকার নিশ্চুপ। সরকার মানবিক ও কূটনৈতিক দিক থেকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি। এই সমস্যা সমাধানে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া ও তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের মৌলিক দায়িত্ব। বিশ্ব মানবতার পাশে সব সময় দাঁড়াতে হবে, একথা পরিস্কার করে সংবিধানে বলা আছে। কিন্তু সরকার এক্ষেত্রে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।
সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শুরু হওয়া এই মানববন্ধনে নেতাকর্মীদের ব্যাপক সমাগম হয়। এসময় প্রেস ক্লাব সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রোহিঙ্গা ইস্যুতে এই মানববন্ধনটি এক পর্যায়ে বিএনপির বিশাল দলীয় সমাবেশে পরিণত হয়। এসময় পুলিশ বাহিনীকেও সুশৃঙ্খলভাবে নিরাপত্তা প্রদান করতে দেখা যায়।
তবে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী তার বক্তব্যে অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি অায়োজিত সারাদেশের মানববন্ধনে সরকারের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বাঁধা দিয়েছে। বিভিন্ন জেলায় মানববন্ধন করতে দেয়া হচ্ছে না।
রিজভী বলেন, সরকার রোহিঙ্গাদের জন্য কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তাদের আশ্রয় দিচ্ছে না। অন্যদিকে রোহিঙ্গাদের পক্ষে মানববন্ধনেও বাঁধা দিচ্ছে। এটি খুবই অমানবিক।তিনি সরকারকে রোহিঙ্গা মুসলমানদের সাময়িক আশ্রয়দান, প্রয়োজনীয় সহযোগিতা এবং কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে তাদেরকে দেশে ফেরত পাঠানোর পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি জানান।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান খান দুদু, ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি হাবীব উন নবী খান সোহেল সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।