রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মিয়ানমারের প্রতিনিধি অং সান সু চি’র বদলে নতুন প্রতিনিধি নিয়োগ করেছে জান্তা সরকার।
‘দ্য স্ট্রেইট টাইমস’ এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ সোমবার জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে এই মামলার প্রাথমিক শুনানিতে মিয়ানমারের প্রতিনিধিত্ব করবে নতুন দায়িত্ব পাওয়া প্রতিনিধি।
২০১৯ সালে এই মামলায় মিয়ানমারের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন সু চি। তবে গতবছর সামরিক অভ্যুত্থানের পর তিনি কারাবন্দী থাকায় এবার তার বদলে অন্য কেউ সেই দায়িত্ব পালন করতে যাচ্ছে।
শান্তিতে নোবেল বিজয়ী এই নেত্রী রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় জড়িত থাকার কারণে অধিকার গোষ্ঠীর সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছিলেন, তবে এখন তিনি কারাবন্দী হয়ে সেইসব জেনারেলদের অধীনে বিচারাধীন রয়েছেন; যাদেরকে তিনি আইসিজি’তে রক্ষা করেছিলেন।
সোমবার জান্তা তাদের ‘প্রাথমিক অভিযোগে’ এই মামলাটিতে আন্তর্জাতিক আদালতের কোনো এখতিয়ার নেই এবং সারগর্ভ শুনানির পূর্বে মামলাটি খারিজ করে দেয়া উচিত মর্মে যুক্তি তুলে ধরবে।
মিয়ানমারের স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক সহায়তামন্ত্রী কো কো হ্লাইং এবং অ্যাটর্নি জেনারেল থিডা ও- এর নেতৃত্বে জান্তার একটি নতুন প্রতিনিধি দল ভার্চ্যুয়ালি উপস্থিত থাকবে। তবে এই দুজন নেতার উপর সেনা অভ্যুত্থানের কারণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
গাম্বিয়ার তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল ও বিচারবিষয়ক মন্ত্রী আবুবকর তামবাদু ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর অভিযোগ এনে মামলাটি করেন তিনি।
গাম্বিয়ার করা এই মামলায় ৫৭-ন্যাশন অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন, কানাডা ও নেদারল্যান্ডসের সমর্থন রয়েছে।
গাম্বিয়া আগামী বুধবার এই মামলায় তাদের যুক্তিতর্ক তুলে ধরবে।
তবে দেশটির ক্ষমতাচ্যুত সু চি’র আইনপ্রণেতাদের ছায়া সংগঠন ‘জাতীয় ঐক্য সরকার’ বলছে, জান্তা এই মামলায় মিয়ানমারের যথাযথ প্রতিনিধি নয়। এছাড়াও তারা দাবি জানায়, জান্তার প্রাথমিক অভিযোগ খারিজ করে দ্রুত মূল শুনানি শুরু করা উচিত।
গাম্বিয়া মিয়ানমারকে ১৯৪৮ সালের গণহত্যা কনভেনশন লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত করেছে। রোহিঙ্গা গণহত্যার পর প্রায় সাড়ে ৮ লাখ রোহিঙ্গা দেশটির প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেছে। আর দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিম রাখাইন প্রদেশে অবস্থান করছে প্রায় ৬ লাখ রোহিঙ্গা।