চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

রোহিঙ্গাদের ৩শ’ গ্রাম জ্বালিয়েছে বর্মী বাহিনী: এইচআরডব্লিউ

চলতি বছরের আগস্ট থেকে শুরু করে এখনও পর্যন্ত মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইনে প্রায় ৩শ’ রোহিঙ্গা গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছে বলে দাবি করেছে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। এতে প্রায় দশ হাজার স্থাপনা নষ্ট করা হয়েছে বলেও দাবি করে এই সংগঠন।

স্যাটেলাইট থেকে নতুন করে পাওয়া ছবি পর্যালোচনা করে এইচআরডব্লিউ এমন দাবি করে।

সংগঠনের এশিয়ার উপ-পরিচালক ফিল রোবার্টসন বলেন, নতুন করে স্যাটেলাইটে পাওয়া এই ছবি বলে দেয়, কেন চার সপ্তাহে এত মানুষ বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী শত শত গ্রাম ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা এই গ্রামগুলোতে ধর্ষণ, হত্যাসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেছে যাতে রোহিঙ্গারা জীবন বাঁচাতে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সহিংসতার শিকার বেশির ভাগ গ্রাম মংডু এলাকায়। এখানে দেখা যায়, পাশাপাশি রোহিঙ্গা মুসলিম এবং বৌদ্ধর বাড়ি থাকলেও রোহিঙ্গারটা জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে, কিন্তু বৌদ্ধদের বাড়িতে কোন কিছু করা হয়নি।

জাতিসংঘের দেয়া তথ্যমতে, ২৫ আগস্টের পর থেকে চালানো সহিংসতা, নির্যাতন করে ৫ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আসতে বাধ্য করেছে মিয়ানমার।

রাখাইন রাজ্যে এক মিলিয়নের বেশি রোাহিঙ্গা বসবাস করে  আসছে। সেখানে এই সহিংসতার আগে ২০১২ সালে চালোনো সহিংসতায় ১৬০ জন নিহত হয়। তারপর থেকেই ধীরে ধীরে এই সহিংসতা ছড়াতে থাকে।মিয়ানমার-রোহিঙ্গা-অং সান সু চিএর পরিপ্রেক্ষিতে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সেনাবাহিনীর বহুদিন ধরে চলমান সংঘর্ষ-সহিংসতা সঙ্কট সমাধানে ২০১৬ সালের আগস্টে গঠিত হয় অ্যাডভাইজরি কমিশন অন রাখাইন স্টেট। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বে ওই কমিশন এক বছরের তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের প্রধান অং সান সু চির কাছে জমা দেয় চলতি বছরের ২৪ আগস্ট।

৬৩ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদন জমা দেয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই ২৪ আগস্ট দিবাগত রাতে ত্রিশটি পুলিশ ও সেনাচৌকিতে রহস্যজনক হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় নিহত হয় নিরাপত্তা বাহিনীর ১২ সদস্য। তারপরই হামলার জন্য রোহিঙ্গা ‘জঙ্গি’দের দায়ী করে জবাব হিসেবে সেনাবাহিনী পুরো অঞ্চলে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে।

সেনাবাহিনীর হামলা ও সহিংসতার মাত্রার ভয়াবহতার কারণে জাতিসংঘ একে ‘পাঠ্যবইয়ে যোগ করার মতো জাতিগত নিধনের উদাহরণ’ বলে অভিহিত করেছে।আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, আনান কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়ন না করার উদ্দেশ্যেই মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এই হত্যাকাণ্ড শুরু করে।