বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করছে বলে জানিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের-বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন।
সোমবার রাজধানীর পিলখানায় বিজিবি সদরদপ্তরে বিজিবি পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের চারদিন ব্যাপী সম্মেলনের প্রথম দিন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করছি।
আবুল হোসেন বলেন, “রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে রোববার মিয়ানমারের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা জানিয়েছে, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষায় যে বর্ডারগুলো রয়েছে সেগুলো সিল করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু কিছু কিছু অংশ এখনো খোলা আছে। তবে আমাদের ফোর্স সজাগ রয়েছে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে।”
“কোন সন্ত্রাসী সংগঠন অস্ত্রও নিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করলে আমরা তাদের আইডেনটিফাই করবো।”
মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে মোকাবেলা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিজিবি মহাপরিচালক।বলেছেন দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রস্তুত আছে বিজিবি।রোহিঙ্গাদের একজনও যেন ঢুকতে না পারে সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে।
আবুল হোসেন বলেন, শুধুমাত্র বিজিবি নয়, আমরা পুলিশ প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তিত্বসহ সবাইকে আমাদের সহযোগিতা করতে বলেছি।
তিনি বলেন, একটি সার্বভৌমত্ব দেশে অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারে না, প্রবেশ করলে আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে, এবং আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
গত বৃহস্পতিবার রাতে মিয়ানমারের পুলিশ চৌকিতে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা হামলার পর অশান্ত হয়ে ওঠে রাখাইন রাজ্য। এর পর সে দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর হামলার পর জ্বলছে রোহিঙ্গা বসতি। চলছে সশস্ত্র সংঘাত। মরছে মানুষ। গুলির শব্দে আতঙ্ক বিরাজ করছে সীমান্ত এলকায়।
মিয়ানমার সরকার ও সেনাবাহিনীর ভাষ্যমতে, ‘আরাকান রোহিঙ্গা সালভ্যাশন আর্মি (আরসা)’ নামে মুসলিম রোহিঙ্গা জঙ্গিদের একটি বিশাল দল বৃহস্পতিবার ভোররাতে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্যের ৩০টি পুলিশ ও সেনা চৌকিতে পরিকল্পিত হামলা চালায়। ওই হামলায় নিরাপত্তা বাহিনী ও পুলিশের কয়েকজন সদস্যসহ কমপক্ষে ৯১ জন নিহত হয়।
ঘটনার পর থেকেই বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ শুরু করে নির্যাতিত রোহিঙ্গারা। অনুপ্রবেশকারি এসব রোহিঙ্গাদের কান্না যেন থামছে না। বৃদ্ধ, নারী ও শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষের যেন ঢল নেমেছে সীমান্তের জিরো পয়েন্টে।
সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি’র শত চেষ্টার পরও অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকানো যাচ্ছে না। বিজিবি সদস্যরা রোহিঙ্গাদের প্রতিহতের চেষ্টা করলেও রাতের আধারে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে অনেক রোহিঙ্গা।