রমযান মাসে আর সবার মতো গর্ভবতীরাও রোজা রাখতে পারবেন। তবে তাদের শরীর, স্বাস্থ্য সব দিক মিলিয়ে যদি সাড়া পান, তবেই তাদের রোজা রাখা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে মেনে চলতে হবে কিছু ডাক্তারী পরামর্শ—
- গর্ভকালীন প্রথম তিন মাস সময়টা সাধারণত বেশ খারাপ যায়। এ সময় দেখা যায় সকালে ঘুম থেকে উঠেই বমি লাগে (কখনো বমি হয়), মাথা ঘুরায়, দূর্বল লাগে। এসব বিষয়কে ডাক্তারী ভাষায় আমরা বলি ‘মনিং সিকনেস’। আর এসব সমস্যা হলে তার জন্য রোজা রাখাটা জরুরি নয়।
- গর্ভের প্রথম তিন মাসেই বাচ্চার হার্ট, ব্রেন, কিডনিসহ সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তৈরি হয়। তাই এ সময় দূর্বলতা নিয়ে রোজা রাখা যাবে না। তাহলে গর্ভের সন্তান অপুষ্টিতে ভুগবে, কখনোবা তার সঠিক বিকাশ হবে না।
- গর্ভধারণের মাঝামাঝি সময় দেখা যায়, সব কিছু অনেকটাই সয়ে যায়। তাই কেউ চাইলে এ সময়ে রোজা রাখতে পারেন। তবে ইফতারের পর থেকেই পর্যাপ্ত পানি, পানীয় এবং খাবার খেতে হবে।
- গর্ভবতীদের জন্য সাধারণত খুবই কম ওষুধের ডোজ দেওয়া হয়। তারপরও যদি একান্তই দিতে হয়, তবে ডোজগুলো এমন ভাবে দেওয়া হয়, যা রোজায় কোনো প্রভাব ফেলবে না। ভিটামিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম, কখনোবা থাইরয়েডের জন্য স্বল্প মাত্রার কিছু ডোজ দেওয়া হয়।
- গর্ভকালীন শেষের সময় সাধারণত ক্ষুধা বেশি লাগে। তাই রোজা রাখা অনেকের জন্য কষ্ট হয়ে যায়। তবে রোজা রাখলেও খাবেন পর্যাপ্ত। ফাঁকে ফাঁকে সুগার, ব্লাডটাও টেষ্ট করে নেবেন। কারণ গর্ভের সময়ে সুগার বাড়লেও সমস্যা, কমলেও সমস্যা। সুগার বেড়ে গেলে হবে ডায়াবেটিস, কমে গেলে অক্সিজেনের অভাবে ব্রেন ঠিক মতো কাজ করবে না।
- ইফতারের পর অন্য সবার মত গর্ভবতীরাও প্রচুর পানি ও ফলের জ্যুস খাবেন। তবে গর্ভবর্তীদের ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে মনে রাখতে হবে, তারা কোনো মতেই আনারস ও পেপের জ্যুস খাবেন না। এতে গর্ভপাতের ঝুঁকি বেড়ে যাবে।
পরামর্শ দিয়েছেন : ডা. নয়নমনি সরকার, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল