বিকেএসপির-৩ নম্বর মাঠে মঞ্চটা প্রস্তুতই ছিল। তাতে নিজেদের কাজটা ঠিকঠাকভাবে করে যাচ্ছিলেন কুশীলবরাও। আচমকা দমকা হাওয়া ও বৃষ্টি পরে সব উত্তেজনা পণ্ড করে দিয়েছে। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের সুপার লিগপর্বে আবাহনী ও প্রাইম দোলেশ্বরের ম্যাচটা রোমাঞ্চের মাত্রা চড়িয়ে শেষ হয় অনেকটা আক্ষেপ নিয়েই। যাতে রেকর্ড গড়াটা দেখতে পারলেও রেকর্ড ভাঙার সুযোগটা উপভোগ করতে পারলেন না ক্রিকেটপ্রেমীরা। শেষঅবধি বৃষ্টি আইনে দোলেশ্বর হেরে গেছে ২০ রানে।
প্রথমে ব্যাট করে আবাহনীর দুজন ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি তুলে নেন। জোড়া সেঞ্চুরিতে পাল্টা জবাব দেয় দোলেশ্বরও। কিন্তু বৃষ্টিতে ছন্দ আটকে যাওয়ায় শেষপর্যন্ত আর রানতাড়ায় পেরে উঠেনি দলটি।
শুক্রবার এনামুল ও নাজমুলের জোড়া সেঞ্চুরিতে ৪ উইকেটে ৩৯৩ রানের পাহাড় গড়ে আবাহনী। বাংলাদেশের মাটিতে লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে এটাই সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর। সেই স্কোর তাড়া করে রেকর্ড গড়া জয়ের দারুণ সম্ভাবনা তৈরি করেছিল দোলেশ্বর।
দলীয় ২৫ রানে ইমতিয়াজ হোসেন (১২) ও ৩৩ রানের মাথায় লিটন দাস (১৪) আউট হওয়ার পর শুরুতে ব্যাকফুটে চলে যায় প্রাইম দোলেশ্বর। কিন্তু তৃতীয় উইকেট জুটিতে জোড়া সেঞ্চুরি করে জয়ের সম্ভাবনা বেশ ভালভাবেই জাগিয়েছিলেন ফজলে মাহমুদ ও মার্শাল আইয়ুব।
দুই ব্যাটসম্যানের ক্ষুরধার ব্যাটিংয়ে দোলেশ্বর যখন জয়ের দিকে ছুটছিল, তখনই শুরু হয় ঝড়ো বৃষ্টি। ম্যাচের ৩০ ওভারের সময় দোলেশ্বরের রান তখন ২ উইকেটে ২১৭, বৃষ্টিতে খেলা থামে। পরে শুরু হয় লম্বা বিরতি দিয়ে। তাতে ডার্কওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে পরিবর্তিত লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৫ ওভারে ২৭৮। শেষ ৫ ওভারে ৬২ দরকার পড়ে দোলেশ্বরের।
এসময় সেঞ্চুরি তুলে নেন দোলেশ্বরের দুই ব্যাটসম্যান মাহমুদ ও মার্শাল। আবাহনীর ওপেনিং জুটি তুলেছিল ৩৬ রান। আর মাহমুদ ও মার্শাল তোলেন ২০৭ রান। ৮৭ বলে ৯টি চার ও চার ছক্কায় ঠিক ১০০ রানে ফেরেন মাহমুদ।
তখন আবারও হানা দেয় বৃষ্টি। খেলা আর শুরু হতে না পারায় ৩৪.১ ওভারে দোলেশ্বরের রান দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ২৪৪। বৃষ্টি আইনে ২০ রানে হার। ৮৮ বলে ৯টি চার ও তিন ছক্কায় ১০৮ রানে অপরাজিত থাকেন মার্শাল আইয়ুব।
এর আগে ৬ ছক্কা আর ৭ চারে ১২২ বলে ১২৮ রান করেন আবাহনী ওপেনার এনামুল। এবারের লিগে এটি তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। তার মতো এবারের লিগে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন নাজমুল হোসেন শান্তও। ২ ছক্কা ও ১২ চারে ১০৬ বলে ১২১ রান করেন নাজমুল।
দুজনে মিলে প্রিমিয়ার লিগে এবারের যেকোনো উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েন। ৩৬.৩ ওভারে দুজনে তোলেন ২৩৬ রান। পরে সে রানটা প্রায় ৪০০’র কাছাকাছি নিয়ে যান বিহারি ও মিঠুন। ভারতীয় ব্যাটসম্যান হানুমা বিহারির ৩৬ বলে ৬৬ ও মোহাম্মদ মিঠুনের ২৪ বলে ৪৭ রানের ইনিংসে ভর করে লিস্ট ‘এ’তে বাংলাদেশের রেকর্ড গড়ে আবাহনী।
আগের রেকর্ডটিও ছিল আবাহনীর। ২০১৬ সালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডানের বিপক্ষে ৫ উইকেটে ৩৭১ রান তুলেছিল তারা। প্রথম দুটির মত তৃতীয় সর্বোচ্চ দলীয় স্কোরও আবাহনীর। মোহামেডানের বিপক্ষেই গত বছর ৫ উইকেটে ৩৬৬ রান তুলেছিল দলটি।