আরও এক ম্যাচে পাওলো দিবালাকে সাইডবেঞ্চে বসিয়ে রেখেছেন জুভেন্টাস কোচ ম্যাস্সিমিলিয়ানো অ্যাল্লেগ্রি। অন্যদিকে গোলের পর আর্জেন্টাইন তারকার উদযাপন নকল করে ভিন্ন আলোচনার জন্ম দিয়েছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। দুইয়ে মিলে জুভ সংসারে আগুন লেগেছে বলে খবর ইতালিয়ান সংবাদ মাধ্যমগুলোতে। তাদের শঙ্কা সেই উত্তাপ থেকে বাঁচতে তুরিন ছাড়তে পারেন দিবালা!
ব্যাপারটা খোলাসা করা যাক। রিয়াল মাদ্রিদ থেকে রোনালদোর আসার পর দিবালার সঙ্গে তার দারুণ এক জুটির চিন্তা করে বুক বেঁধে ছিলেন জুভ সমর্থকরা। বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম সেরা দুই ফুটবলার মাঠে গোলবন্যা বইয়ে দেবেন, এমন আশাও ছিল তাদের।
সেই আশায় ছাই দিয়েছেন স্বয়ং জুভ কোচ অ্যাল্লেগ্রি। রোনালদোর মানিয়ে নিতে যা অপেক্ষা করেছেন, এরপর নিয়মিত একাদশে দিবালাকে একপ্রকার ব্রাত্যই করে দিয়েছেন ইতালিয়ান কোচ। সবশেষ সাসৌলো ম্যাচে নামিয়েছেন শেষের সাত মিনিট আগে। এর আগে পার্মা ম্যাচ শেষ হওয়ার আগেই রাগে স্টেডিয়াম ছেড়ে চলে যান আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড।
দিবালা-অ্যাল্লেগ্রির দ্বন্দ্বে কিছুটা থমথমে পরিস্থিতি জুভেন্টাস ড্রেসিংরুমে। সেটা বাড়তে পারে অ্যারন রামসের তুরিনে আসায়। রীতিমত রেকর্ড গড়ে আর্সেনাল থেকে ইংলিশ ফরোয়ার্ডকে নিয়ে এসেছে জুভরা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার জন্য দলটির রাডারে আছে রিয়াল মাদ্রিদের মার্কো অ্যাসেনসিও এবং লিভারপুলের মোহামেদ সালাহও। বর্তমান ও ভবিষ্যতের সম্ভাব্যতা বিচার করলে তাই প্রশ্নটা উঠেই যায়, শেষ কয়েক মৌসুম জুভদের ভার সফলভাবে বহন করা দিবালার জায়গাটা তাহলে কোথায়?
জায়গা যে কোথায় তার অনেকখানি পরিষ্কার করে দিয়েছেন অ্যাল্লেগ্রি নিজেই। সাইডবেঞ্চে বসিয়ে দিয়েছেন একসময়ের সোনার ডিমপাড়া হাঁসকে। কেনো? ‘আমরা চাই দিবালা আর ক্রিস্টিয়ানো এক সঙ্গে খেলুক। কিন্তু আমাদের একটা ভারসাম্যপূর্ণ দল দরকার ছিল। সাসৌলোর একটা কঠিন রক্ষণ থাকায় আমি প্রয়োজনীয় খেলোয়াড়দেরই খেলিয়েছি।’ এই ছিল জুভ কোচের যুক্তি!
এতো গেল দিবালা-অ্যাল্লেগ্রির দ্বন্দ্বের কাহিনী, তাতে রোনালদোর দায় কী? আদৌ সিআর সেভেনকে কোনভাবেই দায় দেয়া যায় না। বরং দিবালাকে নিয়ে যে মাঠে নামতে চান সেটা সাসৌলো ম্যাচেই বুঝিয়ে দিয়েছেন রোনালদো। গোলের পর নিজের চিরোচেনা ‘সিইইই’ উদযাপন বাদ দিয়ে মুখে হাত দিয়ে দিবালাকে নকল করেছেন, যেন বোঝাতে চেয়েছেন ‘আমি মোটেও তোমার শত্রু নই!’
এদিকে আবার প্রায় একই কাণ্ড ঘটছে মাদ্রিদে। এক দশক ধরে রিয়ালের রক্ষণের ভার বয়ে চলা মার্সেলো হঠাত ব্রাত্য হয়ে পড়েছেন নিয়মিত একাদশে। পাঁচ ম্যাচ ধরে এই ব্রাজিলিয়ানকে সাইডবেঞ্চে বসিয়ে রেখেছেন কোচ সান্তিয়াগো সোলারি। তার জায়গায় যুব একাডেমি থেকে উঠে আসা সার্জিও রেগুইলোর ওপরে ভরসা রেখেছেন রিয়াল কোচ।
ক্ষোভ থেকে রিয়াল ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন মার্সেলো, ‘ক্লাব যেন তার পাওনা পরিশোধ করে দেয় এবং তিনি ক্লাব ছাড়তে চান!’ ৩০ বছর বয়সী ডিফেন্ডারের দিকে আবার চেয়ে আছে জুভেন্টাস। মূলত জুভদের আগ্রহের কথা জেনেই রিয়াল ছাড়তে জোর পাচ্ছেন মার্সেলো।
রোনালদোকে নিয়ে গেছে। অ্যাসেনসিও ও ইস্কোর দিকেও নজর দিয়েছে জুভেন্টাস। আর মার্সেলো তো আছেনই। এভাবে একের পর এক খেলোয়াড় নিয়ে গেলে রিয়াল কী ছেড়ে দেবে? তার উত্তর যে না-ই হবে সেটিও ক্লাবটির চালচলনে পরিষ্কার। সোলারিও গ্রীষ্মকালীন দলবদলের জন্য চিন্তাভাবনা করে রেখেছেন। তার ভাবনায় থাকা অন্যতম ফুটবলারটির নাম পাওলো দিবালা!