রোগীর মৃত্যু হলেই গাফিলতির অভিযোগ তুলে নিকট আত্মীয়দের হাসপাতাল ভাঙচুর করা বা চিকিৎসকদের হেনস্থা করা ‘অপ্রীতিকর’ বলে জানিয়েছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি।
কলকাতার দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার সোনারপুরে বৃহস্পতিবার থেকে ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ লিভার অ্যান্ড ডাইজেসটিভ সায়েন্সে’র (আইআইএলডিএস) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
রাষ্টপতি বলেন: ডাক্তার যখন হাসিমুখে রোগীর সেবা করেন তখন তার মুখের হাসিটাই রোগীর অর্ধেক যন্ত্রণা কমিয়ে দেয়, এটা বাস্তব সত্য। কারণ তখন রোগীরাও চিকিৎসকের ওপর আস্থা রাখেন যে তিনি সুস্থ হয়ে ফিরে আসবেন। চিকিৎসা বিজ্ঞান যতই আধুনিক পর্যায়ে যাক না কেন, বিজ্ঞান এখনও পর্যন্ত মৃত মানুষকে বাঁচিয়ে তোলার গ্যারান্টি দিতে পারেনি, তাই বলে রোগীর মৃত্যু হলে নিকট আত্মীয়দের হাসপাতাল ভাঙচুর করা বা চিকিৎসকদের হেনস্থা করা ‘অপ্রীতিকর’। এর মাধ্যমে সঠিক স্বাস্থ্যসেবা কাঠামো নষ্ট হয়।সঠিক স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে রোগীর স্বজনদেরও অনেক দায়িত্ব রয়েছে।
পাশাপাশি চিকিৎসা নিয়ে যেন অভিযোগ না আসে, সে বিষয়ে সর্তক থাকার জন্যও চিকিৎসকদের বার্তা দিয়েছেন প্রণব।
আইআইএলডিএস’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রণবের পাশেই ছিল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।
মমতার প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতি বলেন: পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষার ক্ষেত্রে, স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অনেক কাজ করেছে মমতা। কাজেই আমি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় উপলব্ধি করেছি যে কি দ্রুততার সঙ্গে এখানে কাজ হচ্ছে এবং কাজ এগোচ্ছে। তাই ওর (মমতা) থেকে বয়সে অনেক বড় হিসেবে আমি তাকে আশীর্বাদ করতে পারি যে, তুমি মহান কাজে এগিয়ে যাও, ঈশ্বর তোমাকে সাহায্য করবেন, ভগবান তোমাকে সাহায্য করবেন’।
মমতাকে রাষ্ট্রপতির প্রশংসাকে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। আগামী জুলাইয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। তার আগে বিজেপি-বিরোধী জোট গড়তে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধির সঙ্গে বৈঠক করেছেন মমতা। বৈঠকের পর বাইরে এসে নাম নিয়ে মমতা মুখ না খুললেও ওই বৈঠকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে মমতা দ্বিতীয় বারের জন্য প্রণব মুখার্জির নাম প্রস্তাব করেন। কংগ্রেসেরও একটি পক্ষ প্রণবেই আস্থা রাখছেন। যদিও সব দলের পক্ষে সর্বসম্মত না হলে প্রণব মুর্খাজি প্রার্থী হবেন না বলে আগেই জানিয়েছেন।