রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়াতে ট্রান্সফার ফি কমানোসহ নানাবিধ উদ্যোগ নিতে রেমিটেন্স আহরণে শীর্ষ ২০টি ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ বৈঠকে প্রাথমিক আলোচনা হলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে আগামী ২৪ জুলাই। এরপর চলতি মাসেই রেমিটেন্স ট্রান্সফার ফি কমানো হতে পারে।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্র এ তথ্য চ্যানেল আই অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন।
ওই সূত্রগুলো জানায়, বৈঠকে প্রবাসী আয় সংগ্রহকারী ২০টি ব্যাংককে সরাসরি কিছু দিক নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি প্রবাসীরা কীভাবে বিনা খরচে তাদের কষ্টার্জিত আয় দেশে পাঠাতে পারবেন তা নিয়ে ব্যাংকগুলোর মতামতও নেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ জামালের নেতৃত্বে অগ্রণী, ব্যাংক এশিয়া, ব্র্যাক, জনতা, ন্যাশনাল, মার্কেন্টাইল এবং ইসলামী ব্যাংকসহ মোট ২০টি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখাপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক শুভংকর সাহা চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, বিনা খরচে প্রবাসীরা যাতে টাকা পাঠাতে পারেন সেই ব্যবস্থা করার জন্য অর্থমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন।
“সেই আলোকে অর্থমন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দিয়ে বাজেটের ঘোষণাটি কীভাবে বাস্তবায়ন করা যাবে সেটি জানতে চাওয়া হয়। সে জন্যই বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিট্যান্স আহরণকারী ব্যাংকগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছে।”
রেমিটেন্স পাঠানোর খরচ কমাতে সরকার ভর্তুকি দেওয়ার চিন্তা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, খরচ কমাতে কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে সে বিষয়ে ব্যাংকগুলো তাদের মতামত জানিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকেরও কিছু পর্যালোচনা ও বোঝাপড়া রয়েছে। এগুলো নিয়ে শিগগিরই বৈঠক করে ভবিষ্যত করণীয় ঠিক করা হবে।
বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, ব্যাংকগুলো সাধারণত প্রবাসী আয় সংগ্রহ করতে তিন থেকে সাড়ে তিন শতাংশ হারে চার্জ আরোপ করে। এই চার্জে ভিন্নতা রয়েছে। তবে বিশ্বব্যাংক বলছে, প্রবাসীদের আয় দেশে পাঠাতে প্রায় ৭ শতাংশ চার্জ দিতে হয়।
বৈঠকের আলোচনা সম্পর্কে অগ্রণী ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান, রেমিটেন্স ফি কমাতে ব্যাংকগুলোর করণীয় সম্পর্কে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। আগামী ২৪ জুলাই এ বিষয়ে চূড়ান্ত আলোচনা হবে। ওই বৈঠকে ফি কমানোর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
গত কয়েক মাস ধরে রেমিটেন্স কমে যাওয়ায় কিছুটা অস্বস্তিতে রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দুশ্চিন্তায় রয়েছে সরকারও।
রেমিটেন্স বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়াতে শিগগিরই ট্রান্সফার ফি কমানো হবে। যা আগামী মাস থেকে কার্যকর হতে পারে।
গত অর্থবছরে (২০১৬-১৭) প্রবাসী আয় কমেছে প্রায় সাড়ে ১৪ শতাংশ। এ অর্থবছরে ১ হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিরা। তার আগের অর্থবছরে রেমিটেন্স এসেছিল ১ হাজার ৪৯৩ কোটি ১১ লাখ ডলার। সেই হিসেবে বছরের ব্যবধানে রেমিটেন্স প্রবাহ কমেছে ১৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ।