চট্টগ্রাম থেকে: শ্রীলঙ্কান রেফারি লাকমাল ভিরাক্কোডির বিরুদ্ধে বর্ণবৈষম্য মূলক আচরণের অভিযোগ তুলেছে চেন্নাই সিটি এফসি। রেফারি তাদের জাপানি মিডফিল্ডার কাতসুমি ইয়ুসাকে ‘চায়নাম্যান’ ডাকায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের কাছে তদন্তের দাবি জানিয়েছে ভারতের ক্লাবটি।
রেফারি বর্ণবৈষম্য করেছেন, ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগই করলেন চেন্নাইয়ের সহকারী কোচ সাত্যিয়া। একজন জাপানিকে চায়নিজ ডাকায় আবেগি হয়ে তুলকালাম করেছেন কাতসুমি, ভাষ্য তার।
‘কাতসুমি একজন জাপানি খেলোয়াড়। আর জাপানিরা এমনিতেই একটু বেশি আবেগি হয়। রেফারির এমনটা করা উচিত হয়নি। আর তিনি আমাদের ভারতীয় ফুটবলারদের নিয়েও কিছু বাজে মন্তব্য করেছিলেন। তাই আমরা খেলা ছেড়ে উঠে যেতে চেয়েছিলাম।’
‘রেফারি ওকে চায়নাম্যান বললেন কেন? আমরা ফেডারেশনের কাছে তদন্তের দাবি করছি।’
ঘটনা বৃহস্পতিবার বিকেলের। শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ টুর্নামেন্টে বসুন্ধরা কিংস ও চেন্নাই সিটি এফসির ম্যাচে এদিন ঘটেছে একাধিক অপ্রীতিকর কাণ্ড। লাল কার্ড দেখেছেন দুই দলের কোচসহ চেন্নাইয়ের দুই ফুটবলার। হলুদ কার্ড ছিল আরও চারটি। ম্যাচের ২৪ মিনিটে এক ফাউল থেকে শুরু উত্তেজনার।
ওই সময় হঠাতই রেফারির উপর খেপে যান চেন্নাইয়ের জাপানি মিডফিল্ডার কাতসুমি ইয়ুসা। খেপে গিয়ে লাথি মেরে ফেলে দেন মাঠের বাইরে থাকা রেফারির টেবিল। এক পর্যায়ে তেড়ে যান রেফারির দিকেও। থমথমে পরিবেশে খেলা বন্ধ থাকে ১২ মিনিট। সেসময় খেলা ছেড়ে উঠে যাওয়ার সিদ্ধান্তও নেয় চেন্নাই।
এক ফাউলকে কেন্দ্র করে রেফারির সঙ্গে কাতসুমির বাকবিতণ্ডা। কাতসুমিকে তখন ‘চায়নাম্যান’ বলে ডাক দিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কান রেফারি লাকমল ভিরাক্কোডি। তাতেই লঙ্কাকাণ্ড! বাধ্য হয়ে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে নেপালি ম্যাচ কমিশনার মহেশ বিস্তাকে। পরে কাতসুমিকে লাল কার্ড দেখিয়ে শুরু হয় খেলা। মাঠ থেকে বেড়িয়ে ডাগআউটে কাঁদতেও দেখা গেছে জাপানি মিডফিল্ডারকে।
প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে আবারও উত্তেজনা। এবার চেন্নাই ডাগআউটে তেড়ে যান বসুন্ধরা কোচ অস্কার ব্রুজেন। জড়িয়ে পড়েন চেন্নাই কোচ মোহাম্মদ আকবরের সঙ্গে হাতাহাতিতে। ফলে দুই কোচকেই লাল কার্ড দেখান শ্রীলঙ্কান রেফারি লাকমল। বিরতি ও ম্যাচের শেষ সময়ে রেফারিদের কঠোর নিরাপত্তায় বাইরে নিয়ে যান পুলিশ সদস্যরা।
পরে সংবাদ সম্মেলনে সরাসরি না বললেও বাজে রেফারিং নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বসুন্ধরার সহকারী কোচ মাহাবুবুর রহমান রক্সি। জানান, তাদের খেলোয়াড়দের বারবার ফাউল করা হলেও না দেখার ভান করছিলেন লঙ্কান রেফারি। আর যে কারণে মেজাজ হারিয়ে প্রতিপক্ষ কোচের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে লাল কার্ড দেখেছেন বসুন্ধরা কোচ অস্কার ব্রুজেন।
‘বারবার বখতিয়ারকে পেছন থেকে ট্যাকল করা হচ্ছিল। ওরা বারবার আমাদের খেলোয়াড়দের মেরেছে। ভালো খেলোয়াড়দের রক্ষার দায়িত্ব রেফারির। পেছন থেকে ট্যাকল করা খুব ভয়ঙ্কর বিষয়। এমনটা করলেই হলুদ কার্ড। রেফারি কার্ডতো দেননি উল্টো তর্ক করেছেন। কোচ এমনিতেই রেগে ছিলেন। তিনি চাইবেনই তার খেলোয়াড়দের রক্ষা করতে।’
প্রথমার্ধে খেলা বন্ধ থাকার সময় উত্তেজনায় একবার মাঠেই ঢুকে গিয়েছিলেন বসুন্ধরা কোচ অস্কার। ফুটবল আইনে একজন রেফারি যেখানে ট্যাকনিক্যাল লাইনের বাইরেই যেতে পারেন না, সেখানে অস্কারের এভাবে ঢুকে যাওয়া উচিত ছিল কিনা এমন প্রশ্নে মূল কোচকে একটু ‘আবেগি’ আখ্যা দিয়েছেন সহকারী কোচ রক্সি।
‘কোচ একটু চিন্তিত ছিলেন। চাপটা তার ভেতরেই রাখা উচিত ছিল। যেটা তিনি রাখতে পারেননি। তিনি আবেগ ধরে রাখতে পারেননি যেটা দলের জন্যই অমঙ্গল।’