চ্যানেল আইয়ের নিয়মিত আয়োজন ‘গানে গানে সকাল শুরু’র আজ ছিল বিশেষ আয়োজন। কারণ আজ জনপ্রিয় রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার জন্মদিন। চ্যানেল আইয়ের ছাদ বারান্দা সকাল থেকেই বিশিষ্টজনদের মিলনমেলায় পরিণত হয়। সেই সঙ্গে চলে রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও সুরের ধারার শিল্পীদের গান। অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয় চ্যানেল আই’তে।
বাঁশির সুরে শুরু হয়েছে অনুষ্ঠান। গাজী আব্দুল হাকিমের বাঁশির সুরের আচ্ছন্নতা কাটতে না কাটতেই রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে জিজ্ঞেস করা হয় জন্মদিন সম্পর্কে। তিনি বলেন, ‘জন্মদিন হয় একজনের, কিন্তু আনন্দ সবার। আনন্দ কখনো একার হয়না। আনন্দ সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিলে বাড়ে।’ এরপর রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও সুরের ধারার শিল্পীদের সমবেত কণ্ঠে পরিবেশিত হয় অনুষ্ঠানের প্রথম গান।
জন্মদিনের এই বিশেষ দিনে রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা মনে করেছেন তার বাবা মায়ের কথা। তিনি জানান, বাবা ছিলেন সরকারী চাকরীজীবী। মা স্কুল টিচার। বাবা খুবই রবীন্দ্র অনুরাগী ছিলেন। বাবার মুখে কবিতা শুনেই রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে প্রথম পরিচয়। যখন সংগীত নিয়ে পড়তে যেতে চাইলেন, তখন বাবা একটু আপত্তি করলেও সমর্থন দিয়েছিলেন মা। গানকে পেশা হিসেবে বেঁছে নেব তা ভাবেননি কখনো। গান যখন পেশা হয়েই গেছে, তখন বাবা মা খুব সাপোর্ট করেছেন। নাহলে এতদূর আসতে পারতেন না বলে জানান তিনি।
এরপর সুরের ধারার শিল্পীরা একাধিক গান পরিবেশন করেন। এক পর্যায়ে মঞ্চে আসেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার গুরু ভাই সাদী মোহাম্মদ। তিনি জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে বন্যাকে বলেন, দ্বৈত কণ্ঠে যত গান করেছি, বন্যার সঙ্গেই বেশি করেছি। আমি কামনা করছি দীর্ঘদিন যেন তার কণ্ঠ সতেজ থাকে। যতদিন তার কণ্ঠ সতেজ থাকবে, ততদিন তা আমাদের আনন্দ দিয়ে যাবে। এরপর এই দুই গুণী শিল্পী মিলে পরিবেশন করেন ‘অমল ধবল পালে’ গানটি।
এরপর অনুষ্ঠানে ফোন করেছেন কথা সাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন। তিনি শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘প্রতিটি সকাল শুরু হয় রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার গানে। তার গান জল তরঙ্গের মতো, শরতের আকাশের মতো মনে হয়। এভাবেই থাকুন, দীর্ঘজীবী হোন।’
গানে গানে সকাল শুরু’র বিশেষ এই পর্বে ফোন দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জাতি হিসেবে আমরা আপনাকে পেয়ে গর্বিত। আপনি আরও অনেক দিন রবীন্দ্রসঙ্গীত নিয়ে থাকবেন এই কামনা করি। আপনার কাছে আগামী প্রজন্ম শিখছে, নতুন প্রজন্ম গড়ে উঠছে, এটা আমাদের জন্য অনেক আশার।’
অনুষ্ঠানে রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা মনে করেন সেই দিনটির কথা যেদিন জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে ‘গানে গানে সকাল শুরু’ অনুষ্ঠানে ফোন দিয়েছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৫ সালের সেই দিনটি সব সময় স্মরণীয় হয়ে থাকবে তার কাছে।
পুরো অনুষ্ঠানে চিত্রশিল্পী আব্দুল মান্নান রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার জন্মদিন উপলক্ষে এক গুচ্ছ রজনীগন্ধা ফুলের ছবি এঁকেছেন। অনুষ্ঠানের শেষে ছবিটি হস্তান্তর করার সময় শিল্পী বলেন, ‘এক গোছা রজনীগন্ধা হাতে দিয়ে বললাম, শুভ জন্মদিন।’ কেক কাটা এবং ফুলের শুভেচ্ছার মধ্যদিয়ে শেষ হয় রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার জন্মদিনের প্রথম সকালের আয়োজন।