বেসরকারী স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পার হত্যাকাণ্ড যেন অন্য কোনো ইস্যুতে ধামাচাপা না পড়ে সে বিষয়ে খেয়াল রাখার আহ্বান জানান মানববন্ধনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা। মানব বন্ধনে শিক্ষার্থী ও নারীর নিরাপত্তা চেয়ে বিভিন্ন বক্তব্য দেয়া হয়।
শনিবার ধানমন্ডির স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ক্যাম্পাস ও সিদ্ধেশ্বরীর নিজস্ব ক্যাম্পাসে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে এসব কথা বলেন শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, দ্রুত যেন এই হত্যার সঙ্গে জড়িত যে বা যারা আছেন তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হয়। পাশাপাশি এই আন্দোলন যেন প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়- ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়ে। আর শিক্ষার্থী ও নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।
মানববন্ধনে রুম্পার সহপাঠীরা বলেন, আর যেন কোন রুম্পাকে দেখতে না হয়। এই হত্যাকাণ্ডের একমাত্র বিচার মৃত্যুদণ্ড। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলেই আমি বা আমরা রক্ষা পাবো, না হলে এরকম নির্মম হত্যা চলতেই থাকবে।
তারা আরও বলেন, শুরু থেকেই এই হত্যাকাণ্ডে অন্য দিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। নুসরাতের ঘটনাতে যেমন হয়েছিল। অন্য কোন ইস্যুতে যেন রুম্পা হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা না পড়ে সেদিকে আমাদের নজর দিতে হবে।
মানববন্ধনে জানানো হয় চারিদিকে এত হত্যা, খুন ধর্ষণে আমরা শুধু স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই, আর কিছু নয়। মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ধানমন্ডি ১৯- থেকে ১৫ নাম্বার রোড প্রদক্ষিণ করে প্রধান ক্যাম্পাসে এস শেষ হয়।
বুধবার দিবাগত রাতে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীর সার্কুলার রোডের ৬৪/৪ নম্বর বাসার নিচ থেকে রুবাইয়াত শারমিন রুম্পার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
জানা যায়, নিহত রুম্পা বাবা রোকন উদ্দিন পুলিশের পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত। স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী রুম্পা রাজধানীর শান্তিবাগ এলাকায় থাকতেন।
প্রশ্ন উঠেছে, পাশের দুই ভবন (৪ তলা ও ৫ তলা) নাকি শেষের ওই ভবন (১০ তলা) থেকে রুম্পা পড়েছে কিংবা তাকে ফেলে দেওয়া হয়েছে? আর ওই তিনটি ভবনের যে কোন একটিতে পরিচিত কেউ না থাকলে রুম্পা কিভাবে সেখানে প্রবেশ করবেন? অথবা তাকে নিয়ে যাওয়া কেউ নিশ্চই ওই ভবনের সংশ্লিষ্ট কেউ?
এসব প্রশ্নের কোনটিরই সদুত্তর দিতে পারেননি পুলিশ। তবে ঘটনাটিকে হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করে পুলিশ বাদি হয়ে রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এটিকে হত্যাকাণ্ড বিবেচনায় নিয়েই প্রাথমিকভাবো তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, আশে-পাশের ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ ইতোমধ্যে সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে ফুটেজে রুম্পা কোন একটি ভবনে প্রবেশ করেছেন কিংবা তাকে কেউ নিয়ে গেছেন এ বিষয়ে এখনো স্পষ্ট ধারনা পাওয়া যায়নি। এছাড়া, রুম্পার পড়ে যাওয়ার বিষয়টিরও কোন ফুটেজে ধরা পড়েনি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান বলেন, হত্যা সন্দেহেই তদন্ত প্রাথমিক কাজ চলছে। আশা করছি দ্রুতই বিস্তারিত জানা যাবে।