টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে ঢাকার আইডিয়াল ল’ কলেজের ছাত্রী জাকিয়া সুলতানা রুপাকে গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার ৪র্থ দফায় সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া এ সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু করেন।
এদিন সাক্ষ্য প্রদান করেন নিহত রুপার বড় ভাই হাফিজুর রহমানসহ মোট তিন জন। অন্য দু’জন হলেন রুপার বন্ধু আব্দুল বারেক ও রুপার আত্মীয় মমতাজ উদ্দীন।
এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি এ কে এম মো. নাছিমুল আখতার সাক্ষ্য গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এনিয়ে মামলার বাদীসহ পুলিশের জব্দ তালিকা ও সুরতহাল প্রতিবেদনের তালিকা অনুযায়ী মোট ১২ জন সাক্ষ্য প্রদান করলেন। আগামী রোববার (১৪ জানুয়ারি) আসামীদের জবানবন্দি গ্রহণকারী ৪ ম্যাজিস্ট্রেটের সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেছেন আদালত।
তিনি আরো বলেন, আদালতে আসামী পক্ষের আইনজীবীগণ রুপার ভাইকে ঘণ্টাব্যাপী জিজ্ঞাসাবাদ করলে রুপার ভাই বার বার কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
আদালত সূত্র জানায়, চার্জশীটে আসামীদের বিরুদ্ধে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের (সংশোধিত ২০০৩) ৯ এর তিন ধারায় গণধর্ষণের অভিযোগ এবং দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় হত্যার অভিযোগ, ২০১ ধারায় লাশ গুমের অভিযোগ এবং ৩৪ ধারায় সহায়তার অভিযোগ আনা হয়েছে। চার্জশীটে মোট ৩২জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
গত বছরের ২৫ আগস্ট বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে রুপাকে চলন্ত বাসে পরিবহন শ্রমিকরা ধর্ষণ করে এবং বাসেই তাকে হত্যার পর মধুপুর উপজেলায় পঁচিশ মাইল এলাকায় বনের মধ্যে তার মৃতদেহ ফেলে রাখে।
এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ওই রাতেই অজ্ঞাত পরিচয় মহিলা হিসেবে তার মরদেহ উদ্ধার করে। পরদিন ময়না তদন্ত শেষে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে মধুপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। পত্রিকায় প্রকাশিত ছবি দেখে তার ভাই হাফিজুর রহমান মধুপুর থানায় গিয়ে তাকে শনাক্ত করেন।
২৮ আগস্ট এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ময়মনসিংহ-বগুড়া রুটের ছোঁয়া পরিবহনের হেলপার শামীম (২৬), আকরাম (৩৫) ও জাহাঙ্গীর (১৯) এবং চালক হাবিবুর (৪৫) ও সুপারভাইজার সফর আলীকে (৫৫) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আদালতে হাজির করার পর তারা প্রত্যেকেই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।