নিষেধাজ্ঞা ও ইনজুরি সমস্যায় জর্জরিত হয়ে নতুন মৌসুমের শুরুটা মোটেই ভাল যাচ্ছে না রিয়াল মাদ্রিদের। লা লিগার পয়েন্ট টেবিলে বর্তমানে ৫ নম্বরে অবস্থান করছে জিনেদিন জিদানের দল। এমন দুঃসময়ে আবার বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের অপয়া মাঠ সিগন্যাল ইদুনা পার্কে খেলতে যেতে হচ্ছে, যে মাঠ রিয়ালকে কেবল যন্ত্রণা ও বিষাদই উপহার দিয়েছে! মাঠটিতে দুদলের মুখোমুখি ৬ লড়াইয়ের তিনটিতে জয় পেয়েছে জার্মান ক্লাবটি। বাকি তিন ম্যাচে পয়েন্ট ভাগাভাগি।
গত মৌসুমে গ্রুপপর্বে এখানে মুখোমুখি হয়েছিল রিয়াল-ডর্টমুন্ড। সেই ম্যাচে মার্কো রিউসের শেষ মুহূর্তের গোলে রিয়ালকে জয়বঞ্চিত করেছিল ডর্টমুন্ড। কেবল এই মাঠেই নয়, রিয়ালের জার্মান রেকর্ড বরাবরই খারাপ। এখানে ১৯টি হার এবং ৭টি ড্রর বিপরীতে জয় আছে মাত্র ৫ ম্যাচে। দুঃসময়ের বৃত্তে থাকা রিয়ালের সামনে তাই ইদুনা পার্কের চ্যালেঞ্জটা যে সহজ হবে না, তা বলাই বাহুল্য।
ম্যাচটি দিয়েই ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলে ১৫০ ম্যাচের মাইলফলক স্পর্শ করবেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। লা লিগায় এখনও গোলের দেখা না পেলেও, চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অ্যাপোয়েলের বিপক্ষে ম্যাচে ২ গোল এসেছে চারবারের বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পা থেকে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বরাবরই অপ্রতিরোধ্য রোনালদো। তাই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তার পায়ের দিকেই চোখ থাকবে রিয়াল সমর্থকদের।
তবে রিয়ালের জন্য ম্যাচে থাকছে পুরনো দুঃসংবাদও। করিম বেনজেমা ও মার্সেলোকে যথারীতি পাচ্ছে না ‘লস ব্লাঙ্কোসরা। সেইসঙ্গে আগের ম্যাচে থিও হার্নান্দেজকেও হারিয়েছে তারা। তাই অভিজ্ঞ টনি ক্রুসকে স্কোয়াডে রেখেছেন জিদান। তার ফেরাটা বাড়তি শক্তি জোগাবে রিয়ালকে।
সাম্প্রতিক বাজে ফর্মের পরও অবশ্য আশাবাদী জিদান। ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে ইতিবাচক কথাই শুনিয়েছেন ফরাসি কিংবদন্তি, ‘আমরা ভাল অনুভব করছি। শেষ ম্যাচে জয় পাওয়ার পর আমরা চ্যাম্পিয়ন্স লীগে খেলতে যাচ্ছি আবারও। প্রতিপক্ষের যে কোনও স্টেডিয়ামে খেলাই চ্যালেঞ্জ। আমরা ডর্টমুন্ডে কখনও জিততে পারিনি এবং এটি একটি চ্যালেঞ্জ। আমরা ভাল ফুটবল খেলতে চাই এবং একটি ভাল ম্যাচ উপহার দিতে চাই।’
ঘরোয়া লিগে রিয়ালের ঠিক উল্টো অবস্থানে ডর্টমুন্ড। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা হলুদ-কালো জার্সির দলটি ৬ ম্যাচের ৫টিতে জিতে লিগ টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করছে। লিগে সর্বশেষ ৩ ম্যাচের তিনটিতেই জয় পেয়েছে তারা। যদিও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জার্মান দলটির শুরুটা ভালো হয়নি। ওয়েম্বলিতে প্রথম ম্যাচে টটেনহ্যামের বিপক্ষে ১-৩ গোলে হেরেছে তারা। রিয়ালের বিপক্ষে ম্যাচে হেরে গেলে টুর্নামেন্ট থেকেই ছিটকে যাওয়ার শঙ্কায় পড়তে হতে পারে। ঘরের মাঠে রিয়ালের বিপক্ষে আধিপত্য ধরে রাখতে চাইবে দলটি।
স্বাগতিক ডর্টমুন্ডও চোটের কারণে পাচ্ছে না মার্কো রিউসকে। সেইসঙ্গে সাইডবেঞ্চে বসেই হয়ত খেলা দেখতে হবে আন্দ্রে শুর্লে ও রাফায়েল গেরেইরোকে।
প্রথম ম্যাচে হেরে গেলেও নিজেদের নিয়ে দারুণ আত্মবিশ্বাসী দলের স্ট্রাইকার মারিও গোটশে, ‘এর চেয়ে ভালো শুরু হতে পারত না। যদিও রিয়ালের বিপক্ষে লড়াইটা বেশ কঠিন হবে।’
রিয়ালের জার্মান পরীক্ষার দিনে মাঠে নামছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের জায়ান্ট ম্যানচেস্টার সিটি, লিভারপুল ও টটেনহ্যাম। লিভারপুলের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ফেরাটা সুখকর হয়নি। প্রথম ম্যাচে সেভিয়ার সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করেছে তারা। এবার লিভারপুলের প্রতিপক্ষ রাশিয়ার স্পার্টাক মস্কো। গার্দিওলার ম্যানসিটি মুখোমুখি হবে শাঁখতার দোনেস্কের। গতবার চমক দেখানো ফরাসি ক্লাব মোনাকো ঘরের মাঠে খেলবে পর্তুগালের দল এফসি পোর্তোর বিপক্ষে। এছাড়া নাপোলি ফেইনুর্ডের এবং বেসিকতাস খেলবে লেইপজিগের বিপক্ষে।