রেফারি বাঁশিতে শেষ-ফুঁ দিতেই ধারাভাষ্যকার বলে উঠলেন, ‘রিয়ালের আরও একটি হার, প্রশ্নের মুখে কোচ হুলেন লোপেতেগির ভবিষ্যত।’ লেভান্তের কাছে হারের পর লস ব্লাস্কোসদের কোচকে নিয়ে একচুল হয়তো ‘অসত্য’ বলেননি ভাষ্যকার। ঘরের মাঠে লেভান্তের কাছে এদিন ১-২ গোলে হেরেছে স্প্যানিশ জায়ান্টরা।
শনিবার স্কোরলাইন ছাড়া রিয়ালময় ম্যাচে নাটকীয়তাও কম ছিল না। দুদলের তিন গোলের সঙ্গে বাতিল হয়েছে সমান পরিমাণ গোলও। লা লিগায় এ নিয়ে সবশেষ চার ম্যাচের তিনটিতেই হারল রিয়াল। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে পাঁচ ম্যাচে জয়শূন্য তারা।
২০০৯ সালের পর এই মৌসুমে রিয়ালের সবচেয়ে বাজে শুরু। এমন শুরুর পর সেই সময় বরখাস্ত হয়েছিলেন কোচ জুন্দে রামোস। লোপেতেগির সেই অবস্থা হবে কিনা, আগামী সপ্তাহই অনেকটা ঠিক হয়ে যাবে। কারণ চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ভিক্টোরিয়া প্লাজেনের পরই বার্সেলোনার বিপক্ষে এল ক্ল্যাসিকো। এই দুই ম্যাচের ফল বলে দেবে রিয়ালের ডাগআউটে কত সময় টিকতে পারবেন স্পেন জাতীয় দলের সাবেক এ কোচ।
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ক্লাব ছাড়ার পর থেকেই গোল খরায় ভুগছে রিয়াল। এই ম্যাচে গোল পাওয়ার আগপর্যন্ত টানা পাঁচ ম্যাচে প্রথম ৫৬ মিনিটে গোল পায়নি রিয়াল। এর মধ্যে চার ম্যাচেই গোলশূন্য। এমন ঘটনা আগে ঘটেছিল ১১৬ বছর পূর্বে।
এদিনও প্রায় দুই ডজন আক্রমণ করে মাত্র একটি কাজে লাগাতে পারেন রিয়াল খেলোয়াড়রা। সেটিও আবার কোনো স্ট্রাইকার গোল করতে পারেননি, দলের হয়ে ৭২ মিনিটে একমাত্র গোলটি করেন মার্সেলো।
ম্যাচের ৭০ শতাংশ বল দখলে রাখলেও ১৩ মিনিটেই রিয়ালের খেলখতম করে দেয় লেভান্তে। রিয়াল সমর্থকদের আসন গরম হওয়ার আগেই লিড নেয় তারা। দুর্দান্ত এক গোলে অতিথিদের লিড এনে দেন হোসে লুইস মোরালেস। রাফায়েল ভারানের ভুলে পোস্টিগার দেয়া বল জালে জড়াতে একফোটা ভুল করেননি স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড।
শুরুতে গোল খেয়ে হতবাক রিয়াল যখন গোলশোধে মরিয়া, তখনই আবার আঘাত। প্রথম গোলের ৭ মিনিট পর স্কোরলাইন ২-০ করে ফেলে সফরকারীরা। ১৩ মিনিটে আবার ভারানের ভুলে পেনাল্টি পায় লেভান্তে। প্রতিপক্ষে পাল্টা আক্রমণ ঠেকাতে গিয়ে বল হাতে লাগান ফরাসি ডিফেন্ডার। স্পটকিক থেকে দ্বিতীয়বার বার্নাব্যু স্তব্ধ করে দেন রোগার মার্টি।
চার মিনিট পরই অবশ্য প্রতিপক্ষের জালে বল জড়িয়েছিল রিয়াল। কিন্তু অফসাইডের ফাঁদে মার্কো আসেনসিওর সেই গোল বাতিল হয়ে যায়। পরে একে পর আক্রমণে লেভান্তে রক্ষণকে ব্যস্ত রাখলেও গোলের দেখা পায়নি রিয়াল। ফলে দুই গোলের লিড নিয়েই বিরতিতে যায় লেভান্তে।
আক্রমণের ধার বাড়াতে বিরতির পর জোড়া পরিবর্তন করেন লোপেতেগি। বেলকে তুলে আলভারো অদ্রিজোলা নামান তিনি, সঙ্গে দানি সেভেলোসের জায়গায় করিম বেনজেমা।
রিয়াল স্ট্রাইকারদের সম্ভাবনাময় হাফডজন আক্রমণ রুখে দেয় লেভান্তের রক্ষণ। অবশেষে ৭২ মিনিটে রিয়ালের হয়ে চার ম্যাচ পর গোলের খাতা খোলেন মার্সেলো। বেলজেমার দেয়া ক্রস ২০ গজ দূর থেকে বুলেট শটে জালে জড়ান ব্রাজিলিয়ান উইংগার। শেষ পর্যন্ত আর কোনো গোল করতে না পারায় হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নদের।
এই হারে ৯ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচনম্বরে রিয়াল মাদ্রিদ। সমানসংখ্যক ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে দেপোর্তিভো আলাভেজ। দুই নম্বরে থাকা সেভিয়ার পয়েন্ট ৮ ম্যাচে ১৬। আট ম্যাচে সমান ১৫ পয়েন্ট বার্সেলোনা ও অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের। গোল ব্যবধানে বার্সা তিন আর অ্যালেটিকো চারে।