বরগুনায় প্রকাশ্য দিবালোকে রিফাত শরীফকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দিয়েছে পুলিশ।
ঘটনার ৬৫ দিন পরে রোববার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বরগুনা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার ওসি তদন্ত হুমায়ূন কবীর।
এসময় বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী আদালতে ছিলেন না। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে পুলিশের বিশেষ শাখা থেকে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের জানানো হলেও কোনো কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি অফিসে।
অভিযোগপত্রে ১নং আসামি নয়ন বন্ড কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাকে এই মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করেছে পুলিশ। আর মিন্নিকে করা হয়েছে ৭ নম্বর আসামি।
গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের মূল ফটকের পাশে রিফাতকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে কয়েকজন যুবক। সেসময় নানাভাবে নিজেকে রক্ষার চেষ্টা করেও বাঁচতে পারেনি রিফাত।
হামলায় গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য রিফাতকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল ৪টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
নিহত রিফাত বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের মাইঠা-লবণগোলা এলাকার দুলাল শরীফের ছেলে।
ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেখানে দেখা যায় কয়েকজন যুবক রিফাতকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে একের পর আঘাত করছে। আর তাদের হাত থেকে স্বামীকে রক্ষার চেষ্টা করছেন রিফাতের স্ত্রী। তিনি চিৎকার করে সাহায্য চাচ্ছেন। কিন্তু কাউকে তাদেরকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি।
রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ১২ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামি করে তার বাবা বাদি হয়ে মামলা করেন।
নানা নাটকীয়তার পর ১৬ জুলাই এই ঘটনায় ‘সম্পৃক্ততা পাওয়ায়; রিফাতের স্ত্রী মিন্নিকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীও দেন তিনি।
তবে মিন্নির পরিবারের দাবি, এই মামলায় প্রভাবশালীদের আড়াল করতেই তাকে ফাঁসানো হয়েছে।