দিনের সূর্য তখন ঠিক মাথার উপরে। ফাল্গুনের শেষেও যেন চৈত্রের উত্তাপ। সেই উত্তাপ থেকে কিছুটা শান্তির পরশ পেতে রাজধানীর রাস্তায় দাঁড়িয়ে ডাব খাচ্ছিলেন একদল রিকশাচালক। সেই সময় এমন দৃশ্যে থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারেননি পরিপাটি পোশাক পরা এক ভদ্রলোক। এক পর্যায়ে নিজের পকেটে থাকা রুমাল বের করে ঘাম মুছতে থাকেন সেই রিকশাচালকদের।
সেই ভদ্রলোক আর কেউ নন, সাতক্ষীরা- ৪ অাসনের আলোচিত সংসদ সদস্য এস এম জগলুল হায়দার। যিনি এরই মধ্যে এমন অনেক সামাজিক ও মানবসেবামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য নিজের নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক জনপ্রিয়।
মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে রাজধানীর খামারবাড়ি মোড় হয়ে এমপি হোস্টেলে যাচ্ছিলেন। পথে দেখেন কয়েকজন রিকশাচালক প্রচণ্ড গরমে তৃষ্ণা মেটাতে ডাব কিনে খাচ্ছেন। তখনই তিনি নেমে যান গাড়ি থেকে। চলে যান ওই রিকশাচালক মাঝে। একজন সংসদ সদস্যের এ কর্মকাণ্ডে হতবাক হয়ে যান তারা।
ডাব খাওয়ার শেষে হলে এস এম জগলুল হায়দার প্রত্যেক রিকশাচালককে তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য খাবার কেনার জন্য কিছু টাকাও দেন।
এই প্রথম নয় এর আগেও নিজ নির্বাচনী এলাকা ও রাজধানী ঢাকায় এমন অনেক ঘটনার নজির স্থাপন করেছেন তিনি। যেখানেই যান সেখানেই হতদরিদ্র মানুষদের খুঁজে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন তিনি।
দেশে যেখানে অনেক সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে খুন, দুর্নীতি, জনবিরোধী কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগ, সেখানে তিনি একজন ব্যতিক্রমী সংসদ সদস্য।
নির্বাচিত হবার পর থেকে এলাকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছেন। আপামর জনতার সঙ্গে মিশে থাকার এক অদম্য আকাঙ্ক্ষা তার।
জগলুল হায়দারের এসব কর্মকাণ্ড কয়েক বছর ধরে চাপা থাকলেও গত বছর মে মাসে লুঙ্গি, গামছা পরে সাধারণ শ্রমিকদের সঙ্গে মাথায় করে মাটি নিয়ে বাঁধ নির্মাণের ছবি ছড়িয়ে পড়ে গণমাধ্যমে। এরপরই অালোচনায় আসেন তিনি। তার শত ব্যস্ততার মাঝেও এমন জনসেবামূলক কর্মকাণ্ডের কারণটা কি?
উত্তর মেলে এই সাংসদের কাছ থেকেই। চ্যানেল আই অনলাইনকে এস এম জগলুল হায়দার বলেন, ‘নির্বাচিত হবার পর থেকে আমি আমার এলাকায় থেকে কাজ করে যাচ্ছি। সাধারণ দরিদ্র মানুষের জন্য আমার প্রাণ কাঁদে। তাদের কষ্ট লাঘবে আমার এ উদ্যোগ। অামি সবসময় চাই দেশের মাটি ও মানুষের সঙ্গে মিশে কাজ করতে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে উন্নয়নমূলক কাজে অংশ নেয়াই আমার লক্ষ্য।’
‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে এ ধরণের কাজের কোন বিকল্প নেই। আর এ ধরণের কাজে আমি সবচেয়ে বেশি উৎসাহিত হই দেশোনেত্রী শেখ হাসিনাকে দেখে। নেত্রী যেখানেই যান আমি দেথছি সবচেয়ে দরিদ্র অবহেলিত মানুষগুলোকে তিনি কাছে টেনে নেন । সবাই এভাবে ভাবতে শিখলেই সম্ভব বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলা।’
রাতে দরিদ্র মানুষের বাড়িতে বাড়িতে খাবার নিয়ে উপস্থিত হন তিনি। কিন্তু রাতে কেন? এ উত্তরে তিনি বলেন: ‘দিনের বেলা খাদ্য বা অন্য সহায়তা দিতে গেলে অনেক সময় আর্থিকভাবে স্বচ্ছল ব্যক্তিরাও এসে দাঁড়ায়। সাহায্য চায়। এজন্য আমি রাতকেই উপযুক্ত সময় হিসেবে বেছে নিয়েছি।’
জগলুল হায়দার সাধারণ মানুষের সঙ্গে তাদের মতো করেই মিশতে চান। সুখে-দুঃখে, বিপদে-আপদে তাদের পাশে থাকতে চান। সাধারণ মানুষের কষ্টটা তাদের মতো করেই বুঝতে চাওয়ার এক প্রবণতা দেখা যায় তার মাঝে ।
সুন্দরবনের কোল ঘেঁষে আইলা বিধ্বস্ত শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের পূর্ব দূর্গাবাটি এলাকার সংসদ সদস্য এস এম জগলুল হায়দার। নির্বাচিত হবার পর থেকেই বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য এলাকার মানুষের কাছে অনেক জনপ্রিয় তিনি।