ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে ৮ বছরের সাজা ঘোষণায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাতের পরিবারসহ স্থানীয়রা। তাদের দাবী, এ রায়ের মাধ্যমে দেশের বিচার ব্যবস্থা যে স্বাধীন, সেটা প্রমাণ হলো।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রায় ঘোষণার পর আদালত প্রাঙ্গণে সন্তোষ প্রকাশ করেন নুসরাতের ভাই রাশেদুল হাসান রায়হান।
তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় রায়হান বলেন: রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। এ রায়ের ফলে নুসরাতের আত্মা কিছুটা হলেও শান্তি পাবে।
রায় ঘোষণার সময় আদালত কক্ষে নুসরাতের ভাই রায়হান ও নুসরাতের মামা সৈয়দ সেলিম উপস্থিত ছিলেন।
সৈয়দ সেলিম বলেন: সঠিক সময়ে ওসি যথাযথ ব্যবস্থা নিলে হয়তো আজ নুসরাতকে জীবন দিতে হতো না। ওসি মোয়াজ্জেমের এ শাস্তি প্রাপ্য ছিলো। রায়ে আমরা সন্তুষ্ট।
রায়কে ঘিরে সকাল থেকে নুসরাতের বাড়ীতে নেয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আর রায়ের দিকে তাকিয়ে ছিলো নুসরাতের পরিবারসহ ফেনী জেলার সর্বস্তরের মানুষ।
দুপুরে বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামছ জগলুল দুটি ধারায় সোনাগাজী মডেল থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেমকে ৮ বছরের কারাদণ্ডসহ অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেন।
অন্যদিকে রায় শুনে নুসরাতের মা কান্নায় ভেঙে পড়েন। এসময় তিনি জানান: এ রায় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। পাশাপাশি আর কোনো পুলিশ অফিসার কোনো মেয়ের সাথে এমন আচরণ করবে না এবং হত্যাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা করবে না।
গত ২৪ অক্টোবর নুসরাত হত্যায় ১৬ আসামির মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পর আদালতে প্রকাশ্যে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেয় আসামিরা। এতে কোনো গণমাধ্যমের সাথে কথা বলাসহ অজানা আতঙ্কে রয়েছে নুসরাতের পরিবার।
তবে তাদের নিরাপত্তার জন্য দিনে রাতে ২৪ ঘণ্টা পুলিশের টিম কাজ করছে বলে জানিয়েছে সোনাগাজী থানার উপ পরিদর্শক ময়নুল হোসেন।
গত ২৭ মার্চ নুসরাতকে শ্রেণিকক্ষে ডেকে নিয়ে যৌন নিপীড়ন করেন মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা। এমন অভিযোগ থানায় দিতে গেলে ওসি মোয়জ্জেম নুসরাতকে অনৈতিকভাবে জেরা করেন এবং নুসরাতের বক্তব্য ভিডিও ধারণ করে সামাজিক মাধ্যমে ছেড়ে দেন।