‘দেশে শিশু নির্যাতন ও হত্যাকারীদের বিচার হবে। শিশু নির্যাতন ও হত্যার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ যেনো কেউ না করে। বাংলাদেশকে শিশুদের জন্য নিরাপদ করতে চাই’। ছোটো ভাই রাসেলের মতো এদেশের কোনো শিশুর ভাগ্যে যেন নির্মম পরিণতি না ঘটে, সে জন্য সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শেখ রাসেলের ৫১ তম জন্মদিনে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের আলোচনাসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। ১৯৭১, ১৯৭৫ এবং বর্তমানে শিশুদের ওপর বর্বরতার নিন্দা ও শাস্তির কথা তুলে ধরেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনজন হারিয়ে বেঁচে থাকার কষ্ট বলে বোঝাতে পারবো না। পঁচাত্তরের কালরাতে ঘাতকের বুলেট রাসেলকেও কেড়ে নেয়। এখন ভাবি, রাসেল বেঁচে থাকলে কেমন দেখতে হতো। এ কারণে শিশুদের চোখে রাসেলের প্রতিচ্ছবি দেখি।
শেখ হাসিনা বলেন, পঁচাত্তরের কালরাতে রাসেলের ভাগ্যে যে পরিণতি হয়েছে তা যেন আর কোনো শিশুর ভাগ্যে না ঘটে, সেজন্য দেশকে নিরাপদ আবাস করে গড়ে তুলতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘ ১৯৭৫ এর সেই নির্মম হত্যাকাণ্ডে সবার শেষে শিশু রাসেলকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। কী অপরাধ ছিলো শিশু রাসেলের, স্বাধীনতা আনা মানুষটির সঙ্গে তাঁর শিশুপুত্রটিকেও রেহাই দেয়নি ঘাতকের বুলেট। কোলে করে যাকে বড় করেছি সেই রাসেল আজ বেঁচে থাকলে বয়স হতো ৫১ বছর। দেখতে কেমন হতো সে’।
বাংলাদেশকে শিশুদের জন্য নিরাপদ করতে চান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘ আর কখনো যেনো রাসেলের মতো শিশুদের হত্যা, নির্যাতনের শিকার না হতে হয়’।
তিনি আরও বলেন,১৯৭১, ১৯৭৫ সালে নারী-শিশু হত্যাকারীদের বিচারের মাধ্যমে দেশকে নিরাপদ করতে হবে। ৭৫’এর হত্যাকারীদের বিচার হয়েছে,আগামী দিনে শিশুদের নিরাপত্তায় এ হত্যাযজ্ঞের বিচার হওয়া দরকার ছিলো।
গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুদের নির্যাতনকারীদের প্রতি ঘৃণা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রাখেন, ‘কাজ করা শিশুদের নির্যাতনকারীরা কি মানুষ’!
শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। তিনি প্রতিবন্ধী, অটিস্টিক শিশুদেরকে অবহেলা না করে ভালোবেসে আপন করে নিতে বলেন।
আলোচনা সভায় আসা শিশু ও অভিভাবকদের প্রতি জাতি গঠনে শিশুদের ভূমিকার কথা স্মরণ করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি শিশুদের নেতৃত্বেও বিকাশে সংগঠন করার প্রয়োজনীয়তা এবং শিশুদের কল্যাণে তাঁর সরকারের নেয়া উদ্যোগগুলোও তুলে ধরেন।