নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে সার্চ কমিটি আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার তাদের সুপারিশকৃত ১০ জনের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেবেন।
ওইদিন সন্ধ্যা ৭টায় সার্চ কমিটিকে বঙ্গভবনে সাক্ষাতের জন্য সময় দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
রোববার বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর সার্চ কমিটির সভাপতি বলেন, ‘নতুন নির্বাচন কমিশন আইনের আওতায় সার্চ কমিটি হওয়ার পর আমরা ৬টি মিটিং করেছি। আরেকটি মিটিং আমাদের বাকী আছে। এছাড়া চারটি মিটিং করেছি সুশিল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে। আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি বিকাল সাড়ে ৪টায় আমাদের নিজেদের সপ্তম মিটিং করার মধ্য দিয়ে আপাতত আমাদের কাজ শেষ করতে পারবো।’
বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘আপনারা জানেন প্রথমে ৩২২ জনের একটি নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল। এরপর চারজন বিশিষ্ট সাংবাদিক আমাদের সঙ্গে বসেন। তারাও কিছু নাম দিয়ে গেছেন।’
‘‘নাম দেওয়ার জন্য একদিন সময় আমরা বাড়িয়েছিলাম। এরপরও বলেছিলাম যদি কোনো রাজনৈতিক দল নাম পাঠায় তাহলে সেটিও আমরা বিবেচনায় নিব। সময় বাড়ানোর পর কিছু রাজনৈতি সংগঠন আরও কিছু নাম পাঠিয়েছেন। সমস্ত নামগুলো বিবেচনায় নিয়ে গত পঞ্চম সভায় আমরা ২০ জনের নাম চূড়ান্ত করি। আজকের সভায় আমরা ১০টি নাম চূড়ান্ত করতে পারিনি। তবে কাছাকাছি এসেছি। আমরা ১২-১৩ জনের মধ্যে ১০ জনের নাম খুঁজে বেড়াচ্ছি। এর মধ্যে আশা করি আমরা ১০টি নাম পেয়ে যাব। ২২ তারিখ সর্বশেষ মিটিং করে পরে আমরা মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে নামগুলো পাঠিয়ে দেব।’’
এক প্রশ্নের জবাবে সার্চ কমিটির প্রধান বলেন, ‘১০ জনের নাম আমরা প্রকাশ করবো না। এটা রাষ্ট্রপতির ডোমেইন। রাষ্ট্রপতির কাছে দিলে পরে তিনি যদি বলেন আপনারা প্রকাশ করেন, তাহলে আমরা প্রকাশ করবো। এটা তার সম্পত্তি, তার কাছেই দিতে হবে। আমাদের প্রকাশ করার কোনো আইন নাই।’
বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত আজকের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্য হাইকোর্টের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি) মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইন এবং লেখক-অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক।
এছাড়া কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দিতে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
গত শনিবার সার্চ কমিটির বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) শামসুল আরেফিন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘এরইমধ্যে ২০টি নাম প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করেছে সার্চ কমিটি। আর দুই-একটি বৈঠক করে ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করা হবে।’
এরই মধ্যে দেশের বিশিষ্ট নাগরিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে চারটি বৈঠক করেছে সার্চ কমিটি। এসব বৈঠকে অংশ নেয়া অধিকাংশের দাবির প্রেক্ষাপটে এবার ইসি গঠনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও ব্যক্তি পর্যায়ে প্রস্তাবিত তিন শতাধিক নাম ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
সেই নামের তালিকায় দেশের বিশিষ্ট নাগরিক, শিক্ষাবিদ ও শিক্ষক, সাবেক বিচারপতি, বিচারক ও আইনজীবী, সাবেক আমলা, সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা ও সাবেক পুলিশ কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ব্যক্তিবর্গ রয়েছেন। তবে দুইবার সুযোগ দেয়ার পরেও বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ইসি গঠনে সার্চ কমিটির কাছে কোনো নাম প্রস্তাব করেনি।
গত ৫ ফ্রেব্রুয়ারি ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন- ২০২২’ অনুযায়ী সার্চ কমিটি গঠন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। কমিটি নির্বাচন কমিশনের প্রতিটি পদের জন্য দুটি করে মোট ১০টি নাম সুপারিশ করবে।
এরপর রাষ্ট্রপতি সেখান থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য চার কমিশনারের নাম চূড়ান্ত করবেন। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মেয়াদ শেষ হয়েছে।