কক্সবাজারের রামুতে লোকালয়ে চলে আসা এক মা হাতিকে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। পরে মৃত হাতিটির শরীর থেকে মাথা ও পা বিচ্ছিন্ন করে মাটি চাপা দেয়া হয়।
এই ঘটনায় মূল হোতাকে আটক করা হয়েছে। বন্য হাতি হত্যার ঘটনার স্বীকার করেছেন আটককৃত নজির আহমদ।
গত জানুয়ারি মাসে মানুষ হাতি দ্বন্দ্ব নিরসন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এবং বনজ সম্পদ রক্ষা কল্প বন বিভাগ যে স্থানে সচেতনতামূলক সভা করেছিল তার মাত্র ২০ গজ এর মাথায় এই হাতিকে হত্যা করা হয়। মঙ্গলবার ভোর রাতে কক্সবাজারের রামু উপজেলার খুনিয়াপালংয়ের ধোয়াপালংয়ের ধানক্ষেতে এই ঘটনা ঘটে।
রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রণয় চাকমা বলেন, খাবারের সন্ধানে ধোয়াপালং এলাকায় ধানক্ষেতে চলে আসে একটি মা হাতি। সেখানে স্থানীয় লোকজন বৈদ্যুতিক শকের ফাঁদ পেতে হাতিটিকে হত্যা করে। এরপর কিছু দুর্বৃত্ত শরীর থেকে হাতিটির মাথা ও পা বিচ্ছিন্ন করে মাটি চেপে দেয়। ঘটনার সাথে জড়িতদের ধরতে অভিযান চালিয়ে ঘটনার মূল হোতা নজির আহমদকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
হিমছড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মিজানুল ইসলাম বলেন, নজির আহমেদ নামের একজনকে আটক করেছি। তিনি এ ঘটনার দায় স্বীকার করেছেন।
ধৃত নজির আহমদ (৭০) রামুর খুনিয়াপালং ইউনিয়নের মির্জা আলীর দোকান এলাকার বাসিন্দা মৃত আলী হোসেনর ছেলে।
কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের ধোয়াপালং রেঞ্জ কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, সোমবার মধ্যরাতে রামুর খুনিয়াপালং ইউনিয়নের মির্জা আলীর দোকান সংলগ্ন পাহাড়ী এলাকায় স্থানীয় ধানক্ষেতে ৫/৬ টি বন্যাহাতির দল খাবার খেতে নামে। এসময় ধানক্ষেতটির মালিক নুরুল ইসলাম ও তার স্বজনরা হাতিগুলো তাড়ানোর চেষ্টা চালায়। এক পর্যায়ে তারা ধানক্ষেত থেকে তাড়ানোর জন্য হাতিগুলোকে বিদ্যুতের শক দেয়। এতে অন্য হাতিগুলো পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও একটি হাতি ঘটনাস্থলে মারা যায়। পরে মৃত হাতিটিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে খন্ড-বিখন্ড করার পর ধানক্ষেতে মাটি চাপা দেয়।
তিনি আরো বলেন বলেন, মঙ্গলবার সকালে হাতিটির মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় রামু থানায় সাধারণ ডায়েরী এবং কক্সবাজার বন আদালতে ৮ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন কবির বলেন, এটি খুবই দুঃখজনক ঘটনা। জানুয়ারি মাসে হাতি মারা যাওয়ার পাশেই মানুষ হাতি দ্বন্দ্ব নিরসন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এবং বনজ সম্পদ রক্ষা করবে সচেতনতামূলক সভা ও করেছি। তারপরও এসব মানুষকে আমরা সচেতন করতে পারিনি। ভেটেনারি সার্জন এসে হাতিটির কিছু অংশ নিয়ে বাকিগুলোও পুঁতে ফেলা হয়েছে।