রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (রাবিসাস) ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব করেছে। শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন সিনেট ভবনের সামনে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ও সাংবাদিক ইকবাল সোবহান চৌধুরী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগে সিনেট ভবনের সামনে থেকে সংগঠনের সদস্যরা শোভাযাত্রা বের করেন। এরপর সিনেট ভবনের সামনে জাতীয় সংগীত গেয়ে জাতীয় পতাকা উত্তালন করা হয়।
সংগঠনের সাবেক সভাপতি ও নাট্যজন অধ্যাপক মলয় ভৌমিকের সভাপতিত্বে ও প্রাক্তন সদস্য শাহ আলমের সঞ্চালনায় উদ্বাধনী অধিবশনে সাবেক সভাপতি আব্দুর রব মজুমদার স্বাগত বক্তব্য দেন। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হামিদুজ্জামান রবি এবং সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম শুভেছা বক্তব্য দেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলার মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিস্তৃত ভূমি রয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ডা. শামসুজ্জোহা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতার বীজ বপন করেছেন। অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ইউনুস জীবন দিয়ে অশুভ চিন্তা ও শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন।
তিনি আরও বলেন, আজ যখন দেখি রাজনৈতিক দলের সভাপতি হওয়ার জন্য কেউ উপাচার্যের পদ ছেড়ে দিতে চান, তখন আমাদের লজ্জিত হতে হয়। যখন দেখি ছাত্র সংগঠন তার অতীত ঐতিহ্য ভুলে টর্চার সেল গঠন করে, নির্যাতনের ঘটনা ঘটে, তখন তা আমাদের কলঙ্কিত করে। সর্বক্ষেত্রে আমরা অবক্ষয়ের দিকে যাচ্ছি।
বিশেষ অতিথি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান বলেন, সাংবাদিক হতে হলে ম্যাস কমিউনিকেশন অ্যান্ড জার্নালিজম পড়তে হবে এমন নয়, তবে অবশ্যই সততা, নিষ্ঠা, সাহস থাকতে হবে। সাংবাদিকদের অবশ্যই সাহসী হতে হবে। আমার মনে হয়, একজন সাংবাদিকের যত রিস্ক, একজন ভাইস চ্যান্সলররেও তত রিস্ক থাকে না। কারণ সাংবাদিকের সত্য কথা যে সবার ভাল লাগবে এমন নয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিকতার উদ্দেশ্য অনেক মহৎ। তবে আমি মনে করি সাংবাদিকদের কেবল দেশ নয়, সারা বিশ্বে প্রভাব ছড়িয়ে পড়া উচিৎ।
উদ্বাধনী অনুষ্ঠানে সাবেক সাধারণ সম্পাদক কেএম শহীদুল হকের ধন্যবাদ জ্ঞাপনের পর অধ্যাপক মলয় ভৌমিক বক্তব্য দেন। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা ও অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া, বরেদ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ওসমান গণি তালুকদার, রাবিসাসের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মামুন আব্দুল কাইয়ুম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দুপুর আড়াইটায় সিনেট ভবনে সংগঠনের আমন্ত্রিত অতিথি, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, প্রাক্তন-বর্তমান সদস্যদের স্মতিচারণ শুরু হয়। বিকেল পাঁচটায় সাংগঠনিক অধিবেশন শুরু হয়। সন্ধ্যায় ধ্রুপদালোক নৃত্যনাট্য ‘বিদায় অভিশাপ’ পরিবশেন করে।
এর আগ গত শুক্রবার বিকেল পাঁচটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত কেদ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় প্রাক্তন সদস্যরা অনুষ্ঠানের নিবন্ধন করেন এবং তাদের প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।