একাত্তরের জনযুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের স্মরণে ও বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ স্মরণস্তম্ভ এবং যুদ্ধের বিরোধিতা কারীদের ঘৃণিত হিসেবে চিহ্নিতের লক্ষ্যে ‘ঘৃণাস্তম্ভ’ নির্মাণের দাবি জানানো হয়েছে।
দেশের সব জেলা ও উপজেলায় এমন দুইটি বিশেষ স্তম্ভ প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে মানববন্ধন আয়োজন করেছে আত্মদায়বদ্ধ সংগঠন ‘প্রজন্মের চেতনা’।
শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, একাত্তর সালে মুক্তিযোদ্ধ অংশগ্রহণ করেছিল দেড় লাখ যোদ্ধা। কিন্তু এখন নাকি আড়াই লাখ মুক্তিযোদ্ধা ভাতা নিচ্ছে। এরা কোথা থেকে এলো, কিভাবে এ ভাতা নিচ্ছে।
এসব ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
ঘৃণাস্তম্ভ ও স্মরণ স্তম্ভ নির্মাণের বিষয়ে বক্তারা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ইতিহাসের বৃহত্তর স্বার্থে একাত্তর সালে সংঘটিত জনযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী নিহতদের স্মরণে ও জীবিত যোদ্ধাদের বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ জেলা ও উপজেলা শহরে স্মরণ স্তম্ভ এবং যুদ্ধের বিরোধীতাকারীদের ঘৃণিত হিসেবে চিহ্নিতর লক্ষ্যে উদ্যানসহ সকল জেলায় ‘ঘৃণাস্তম্ভ’ নির্মাণে নিজ উদ্যোগে সকল স্তরের জনগণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
মানববন্ধনে প্রজন্মের চেতনার আহ্বায়ক মোহাম্মদ গোলাম নবী হোসেন বলেন, একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধ হয়নি হয়েছে জনযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানার জন্য একটি গ্রহণযোগ্য নাগরিক কমিশন গঠন করে প্রকৃত তথ্য সংগ্রহ করে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার আহ্বান জানাচ্ছি।
বীরপ্রতীক নাজিমুদ্দিন গেরিলা বলেন, আমি চাইনা আমার মৃত্যুর পর আমাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হোক। মুক্তিযোদ্ধাদের অনেক ত্যাগের বিনিময়ে এ বাংলাদেশ। আমাদের জীবদ্দশায় আমরা কোন সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্ত হই নি। জুটেছে শুধুই নিগ্রহ যন্ত্রণা। মুক্তিযোদ্ধারা বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে। হাসপাতালে চিকিৎসা পাচ্ছে না। তাদের মৃত্যুর পরে এই সম্মান দরকার নেই।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মাহবুব হোসেন বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীরা সবসময় গণতন্ত্রকে হত্যা করতে চেয়েছিল। তাই তাদের জন্য ঘৃণাস্তম্ভ তৈরি করা উচিত।
মানববন্ধনে উপস্থিত ভাস্কর রাশা বলেন, স্মরণস্তম্ভ ও ঘৃণাস্তম্ভ আমাদের একটি যৌক্তিক দাবি। প্রজন্মের চেতনার মাধ্যমে আমরা বলতে চাই যে প্রতিবছর যেন এই স্মরণ স্তম্ভে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য শ্রদ্ধা জানানো হয় এবং ঘৃণাস্তম্ভে মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের ঘৃণা জানানো হয়।
মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রজন্মের চেতনার সদস্য সালেকুর রহমান সুমন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক এআইজি মালেক খসরু, বীর প্রতীক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, বীর প্রতীক আনোয়ার হোসেন, ফজলুর রহমান, সাঈদ অপু, শাজাহান কবীর সুমন, এম এম রাশেদ রাব্বি, অরন্য জুয়েল, মাসুদ আলম, জালাল হোসেন লাইজুসহ অন্যান্যরা।