কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে দেশে ফিরে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তিনি সবসময়ই দলের সঙ্গে আছেন, তবে অন্য কেউ দায়িত্ব নিলে তিনি একটু বিশ্রাম পান। সেসময় গণভবনের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত দলীয় নেতা এবং মন্ত্রীরা ‘না-না’ বলতে থাকেন এবং তাকেই নেতৃত্বে থাকতে হবে বলে মন্তব্য করেন।
ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি কানাডাপ্রবাসী মনজুরে খোদা টরিক ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। স্ট্যাটাসে তিনি প্রধানমন্ত্রীর চিন্তার প্রশংসা করেন। একই সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব এবং রাষ্ট্রের নেতৃত্বে থাকার সময়সীমা নির্ধারণের ব্যাপারে কিছু পরামর্শ তুলে ধরেন।
স্ট্যাটাসে টরিক লিখেছেন:
‘আসন্ন সম্মেলনকে ঘিরে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি ৩৫ বছর ধরে একই পদে আছেন, এবার সুযোগ দিলে তিনি সভাপতি থেকে অবসর নিতে চান! বিষয়টি কার্যকর হোক বা না হোক – অন্তত উনার এই বোধ-বিবেচনাকে সাধুবাদ জানাই! ১৯৯৬ সালেও শেখ হাসিনা বলেছিলেন, তিনি ৫৭ বছর বয়সে রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন। উনার সেটা নেয়া হয়নি! কারণ তাঁর দলের নেতাকর্মীরা সেটা চায়নি!
বাংলাদেশের সরকারী পদে চাকুরীরও একটা বয়স সীমা আছে, ২৫ বছর চাকুরীর পর অবসর নিতে হয়। কিন্তু এই আইন যারা প্রণয়ন করেছে, সেই রাজনীতিকদের বেলায় এর কোন ব্যবস্থা রাখা হয়নি বা করা যায়নি। তার প্রধান কারণ রাজনৈতিক দলগুলো তা কখনোই চায়নি।
দলগুলো চাইলে, সদিচ্ছা দেখালে নির্বাচন কমিশন এই বিষয়ে একটা প্রজ্ঞাপন জারি করতে পারে। সকল রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্বে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ২ বার করে মোট ৪ বার থাকতে পারার ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করা। একেকটি দলের জাতীয় সম্মেলন ৪ বছর পরপর হলে- একজন নেতৃত্ব ১৬ বছর মূল পদে ভূমিকা রাখার সুযোগ পাবেন। একইভাবে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী পদেও ২ বার করে থাকতে পারার বিধান বাধ্যতামূলক করা উচিত। সেটা হলেও তারা এই পদে ২০ বছর থাকতে পারবেন! তাহলে দেখা যাচ্ছে দলের পদে ১৬ বছর আর সরকার পদে ২০ বছর, মোট ৩৬ বছর ক্ষমতায় ও নেতৃত্বে থাকা হয়ে যায়! তারপরও কি আর দরকার আছে..? সেটা করা না গেলে নতুন নেতৃত্ব আসবে/তৈরি হবে কীভাবে..?
এই মাসে দু’টি প্রাচীন সংগঠন – বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও কমিউনিস্ট পার্টির সম্মেলন হতে যাচ্ছে, আশা করি দলের নেতা-কর্মীরা ‘নেতৃত্বের পদায়ন ও সময়কাল’ নিয়ে আলোচনা করবেন, একটা সিন্ধান্ত ভাববেন।’