দুর্নীতির দায়ে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সাজা পাওয়ার দুইদিনের মাথায় সেই রায় নিয়ে ভিন্ন ইঙ্গিত দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। শনিবার নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাট এলাকায় কাঁচপুর, মেঘনা ও গোমতী দ্বিতীয় সেতুর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করে তিনি বলেছেন, ‘এই রায় দেশের দুর্নীতিবাজ রাজনীতিকদের জন্য সতর্কবার্তা। এর মাধ্যমে দুর্নীতিবাজরা সতর্ক হয়ে যাবে। রাজনীতি করলে জেল-জুলুম মেনে নিতেই হবে। জেল হচ্ছে রাজনীতিবিদদের অনুসঙ্গ। আমরাও জেল জুলুম খেটে এখানে এসেছি। আমি নিজেও চার বছর জেল খেটেছি।’ এই বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে তাহলে কি নতুন কোনো বার্তা দিতে চাইছেন আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় এ শীর্ষ নেতা? আমরা জানি গত বৃহস্পতিবার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। শুধু তাই-ই নয়, তার ছেলে তারেক রহমান, আপন ভাগ্নেসহ আরো পাঁচ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ডের পাশাপাশি দুই কোটিরও বেশি টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে এই রায়ের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে সেদিন যে কথা বলেছিলেন; তার অাজকের বক্তব্য সম্পূর্ণই আলাদা। ওইদিন তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার রায় নিয়ে উচ্ছ্বসিত হওয়ার কারণ নেই। এই রায় দিয়েছে আদালত; এর সঙ্গে সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই। রায় নিয়ে ওবায়দুল কাদেরের আজকের বক্তব্যের পর রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা নানা রকম উত্তর খুঁজতে চাইছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তা জন্ম দিয়েছে হাজারো প্রশ্নের। অনেকেই ভাবছেন-এই রায়ের পর এখন আওয়ামী লীগের ভেতরেই শুদ্ধি অভিযান শুরু হবে। বিশেষ করে যাদের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে নানা রকম দুর্নীতির অভিযোগ আছে। অনেকের ধারনা এই রায়ের পর আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে যাচ্ছে। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যেদিন রায় ঘোষণা হয়, ওইদিনই বরিশালে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দেন, দুর্নীতিবাজদের ঠাঁই বাংলার মাটিতে হবে না। তাই আমরা নিশ্চিত করেই বলতে পারি এই রায় অনেকের জন্য সতর্কবার্তা। আমরা মনেকরি, দলমত নির্বিশেষে দুর্নীতিবাজ রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। তবেই বাংলাদেশ হয়ে উঠবে প্রকৃত সোনার বাংলা।