চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

রাজধানীর খাল ভরাট করে ট্রাক টার্মিনাল!

রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় একটি খালের ২০০ মিটার ভরাট করে স্থানীয় প্রভাবশালীরা ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ করেছেন। বিষয়টির সঙ্গে স্থানীয় প্রভাবশালীদের সঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কতিপয় কর্মকর্তাও জড়িত বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশে জমি নদী পাহাড় বন খাল দখল একটি স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। ফলে এখানে দিনকে দিন উজার হচ্ছে বন। শুকিয়ে যাচেছ নদী খাল। এগুলো দেখার যেন কেউ নেই।

একটি সংবাদ প্রতিবেদনে জানা যায়: রামচন্দ্রপুর এলাকায় একটি খাল আছে। এই খালের শুরু বুড়িগঙ্গা নদী তীরের চন্দ্রিমা মডেল টাউন এলাকা থেকে। মোহাম্মদপুরের বছিলা, চাঁদ উদ্যান হয়ে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পথ ঘুরে খালটি বাড়ইখালী এলাকা দিয়ে আবার বুড়িগঙ্গাতে মিশেছে। মাঝখানে বছিলার লাউতলা বাজার এলাকায় খালের প্রায় ২০০ মিটার হারিয়ে গেছে। সেখানে খাল ভরাট করে গড়ে উঠেছে অবৈধ ট্রাক টার্মিনাল। আর এই টার্মিনালে দোকান বানিয়ে, ট্রাক রাখার ভাড়াসহ মাসে চালকদের ইউনিয়নের মাসে বাণিজ্য হয় অন্তত সাত লাখ টাকা। বছিলা, ঢাকা উদ্যানসহ আশপাশের এলাকার বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ এই খাল। হঠাৎ খালের গতি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভারী বৃষ্টি হলেই ওই এলাকায় জলাবদ্ধতা হচ্ছে। পানি নেমে যেতেও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় লাগছে। সাবেক কাউন্সিলরের লোকজন তিন-চার বছর আগে লাউতলা বাজার এলাকায় খালে মাটি ফেলে ভরাট করেন। যে অংশে টার্মিনাল করা হয়েছে, সেখানে খালের প্রস্থ ছিল প্রায় ১০০ মিটার। এখন খালের ২০০ মিটার ভরাট করা হয়েছে। ভরাট করা জায়গায় দ্বিতল একটি ভবন বানিয়ে ট্রাকচালক ইউনিয়নের কার্যালয় করা হয়েছে, যেখানে বড় সাইনবোর্ডে লেখা ‘বাংলাদেশ আন্তঃজেলা ট্রাকচালক ইউনিয়ন, মোহাম্মদপুর শাখা’।

গত বছরের ডিসেম্বরে ওয়াসার কাছ থেকে রাজধানীর খালগুলো ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ঢাকা উত্তর সিটির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শওকত হোসেন বলেন: রামচন্দ্রপুর খালের কিছু অংশ গাবতলী-সদরঘাট বেড়িবাঁধের বাইরে পড়েছে। বেড়িবাঁধের বাইরে থাকা খালগুলো সিটি করপোরেশনকে হস্তান্তর করা হয়নি। রামচন্দ্রপুর খালের যে অংশটুকু বেড়িবাঁধের ভেতরে, শুধু সেই অংশের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। বাকিটা পানি উন্নয়ন বোর্ডের।

তিনি বলেন: এই খালের যে অংশটুকু ভরাট করে ট্রাকস্ট্যান্ড করা হয়েছে, তা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীন। পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আইনুল বলেন: রামচন্দ্রপুর খাল খননের একটি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। প্রকল্প অনুমোদিত হলে খাল খননের পাশাপাশি দখলমুক্ত করা হবে।

সিটি কর্পোরেশন, ওয়াসা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সমন্বয়হীনতা ও কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার কারণে প্রভাবশালীরা এভাবে দখল করে নিচ্ছে দেশের সম্পদ। আর তাতে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা, অকাল বন্যা, খরা ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। বিশ্ব আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে যে সব কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে তার অধিকাংশই বাস্তবতা বর্জিত। আমরা এই সব অনিয়ম দখল থেকে ঢাকা শহরকে মুক্ত করার জন্য সরকারে সংশ্লিষ্ট মহলকে আহবান জানাবো, তারা যেন দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে। নতুবা এই শহর আর বাসযোগ্য থাকবে না।