২০১৬-১৭ অর্থবছরের জুলাই-মে পর্যন্ত বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে আয় হয়েছে তিন হাজার ১৭৯ কোটি ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৫৬ কোটি ডলার বা ৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ কম। তবে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বেড়েছে তিন দশমিক ৬৭ শতাংশ। আলোচিত সময়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হলেও গত বছরের তুলনায় রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বেড়েছে।
মঙ্গলবার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশের বেশি আসে তৈরি পোশাক খাত (ওভেন ও নিটওয়্যার) থেকে। কিন্তু চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে এ দুই খাতে রপ্তানি আয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম হয়েছে। নিটওয়্যারে কমেছে ২ দশমিক ০৯ শতাংশ এবং উভেন খাতে কমেছে ১০ দশমিক ২১ শতাংশ। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল মোট রপ্তানি আয়ে।
ইপিবির প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে মোট রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৩৩৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে ৩ হাজার ১৭৯ কোটি ডলার। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় কম হয়েছে ১৫৬ কোটি ডলার বা ৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ। তবে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলেও ১১ মাসে প্রবৃদ্ধি সামান্য বেড়েছে। আগের অর্থবছরে ১১ মাসে রপ্তানি আয় হয়েছিল তিন হাজার ৬৬ কোটি ৪২ লাখ ডলার। অর্থাৎ রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
আর মাসওয়ারি চলতি বছরের মে মাসে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩৩৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার। এ সময়ে রপ্তানি আয় হয়েছে ৩০৬ কোটি ৯০ লাখ মার্কিন ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮ দশমিক ৫২ শতাংশ কম।
গত অর্থবছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ১ দশমিক ৩৯ শতাংশ। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে তৈরি পোশাক খাতের পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছে দুই হাজার ৫৬২ কোটি ৪৮ লাখ মার্কিন ডলার।
এ সময় লক্ষ্যমাত্রা ছিল দুই হাজার ৭৩৮ কোটি ৪৬ লাখ মার্কিন ডলার। অর্থাৎ লক্ষমাত্রা থেকে পিছিয়ে আছে ১৭৫ কোটি ৯৮ লাখ ডলার বা ৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ কম।
এর মধ্যে নিটওয়্যার খাতের পণ্য রপ্তানিতে এক হাজার ২৫০ কোটি ডলার এবং ওভেন গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানিতে এক হাজার ৩১১ কোটি ৯৮ লাখ ডলার আয় হয়েছে।
পরিসংখ্যান বলছে, অর্থবছরের প্রথম জুলাই মাসে তৈরি পোশাক খাত থেকে রপ্তানি আয় অর্জিত হয় ২১১ কোটি ৭৫ লাখ ডলার। পরের মাস আগস্টে এ খাত থেকে রপ্তানি আয় আসে ২৭২ কোটি ৬২ লাখ ডলার। সেপ্টেম্বরে ঈদুল আজহার কারণে বেশ কিছুদিন ছুটি থাকায় রপ্তানি আয়ে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে গত অক্টোবরে ২৫০ কোটি ১৩ লাখ, নভেম্বর মাসে কিছুটা কমে ২৩১ কোটি ৯৯ লাখ ও ডিসেম্বর মাসে ২৫৭ কোটি ৮৪ লাখ ডলার অর্জিত হয়। নতুন বছরের প্রথম মাসে জানুয়ারি মাসে পোশাক রপ্তানি থেকে আয় এসেছে ২৭০ কোটি ৩৫ লাখ, ফেব্রুয়ারি মাসে ২২২ কোটি ৮৮ লাখ ডলার।
মার্চে ২২৯ কোটি এবং এপ্রিলে রপ্তানি আয় এসেছে ২৭৭ কোটি ৫৬ লাখ ডলার।
ইপিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, অন্য পণ্যের মধ্যে ১১ মাসে হোম টেক্সটাইল খাতে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৬ দশমিক ৭২ শতাংশ। এই সময়ে আয় এসেছে ৭৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার।
পাট ও পাটজাত পণ্যে ১১ মাসে ৯ দশমিক ৮৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। এ সময়ে আয় এসেছে ৯০ কোটি ৩৭ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে তিন দশমিক ৯৯ শতাংশ বেশি।
চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে অর্থবছরের ১১ মাসে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ১৭ শতাংশ। আয় হয়েছে ১১২ কোটি ৩৬ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ দশমিক ১৭ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া গত ১১ মাসে প্লাস্টিক পণ্যে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৩৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
এই সময়ে আয় এসেছে ১০ কোটি ৯৫ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩০ দশমিক ০১ শতাংশ বেশি। এদিকে গত ১১ মাসে কৃষিপণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি কমেছে ৩ দশমিক ৯১ শতাংশ। এই সময়ে আয় এসেছে ৫১ কোটি ৫৭ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫ দশমিক ৯০ শতাংশ কম।