চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

রণদা প্রসাদ হত্যায় মির্জাপুরের মাহবুবুরের নাম

দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা ও তার ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহা হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের বৈরাটিয়া পাড়ার মো. মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।

মানবতাবিরোধী অপরাধের তিনটি অভিযোগের ভিত্তিতে ধানমন্ডির তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে তদন্ত প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ বৃহস্পতিবার তুলে ধরেন সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান এবং জ্যেষ্ঠ সদস্য সানাউল হক।

এ সময় হান্নান খান সাংবাদিকদের বলেন, আসামি মাহবুবুর রহমানের বাবা আব্দুল ওয়াদুদ মুক্তিযুদ্ধের সময় মির্জাপুর শান্তি কমিটির সভাপতি ছিলেন। মাহবুবুর রাহমান ও তার ভাই আব্দুল মান্নান সে সময় রাজাকার বাহিনীর সদস্য ছিলেন।

“মাহবুবুর এক সময় জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক ছিলেন। তবে নির্দলীয়ভাবে তিন তিনবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীতা করলেও প্রতিবারই পরাজিত হয়েছেন।”

মাহবুবুর রহমান

তদন্ত প্রতিবেদন উদ্বৃত করে হান্নান খান বলেন, ‘মাহবুবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মে মধ্যরাতে স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ২০-২৫ জন সদস্যকে নিয়ে রণদা প্রসাদ সাহার বাসায় অভিযান চালায়।’

অভিযানে রণদা প্রসাদ সাহা, তার ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহা, রণদা প্রসাদের ঘনিষ্ঠ সহচর গৌর গোপাল সাহা, রাখাল মতলব ও রণদা প্রসাদ সাহার দারোয়ানসহ ৭ জনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে সবাইকে হত্যা করে লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেয়। তাদের লাশ আর পাওয়া যায়নি।

তদন্ত সংস্থার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সানাউল হক বলেন, এ প্রতিবেদনটি তদন্ত সংস্থার ৫৪তম প্রতিবেদন। মামলাটির তদন্ত শুরু হয়েছিল গত বছরের ১৮ এপ্রিল। তদন্ত সম্পন্ন করতে দেড় বছরেরও বেশি সময় লেগেছে।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় আসামি টাঙ্গইলের মির্জাপুরের ভারতেশ্বরী হোমসের আশপাশের এলাকা, নারায়ণগঞ্জের খানপুরের কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ও তার আশপাশের এলাকা এবং টাঙ্গাইল সার্কিট হাউজ এলাকায় অপরাধ সংগঠিত করে। তদন্তে মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে অপহরণ, হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও গণহত্যার প্রমাণ ওঠে এসেছে।

তদন্ত চলার সময় ৬০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে সানাউল হক বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনে ১০০ পাতার ডকুমেন্ট সংগ্রহ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে চারটি ভলিউমে ৩৮০ পাতার তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। শিগগিরই তা প্রসিকিউশনে জমা দেওয়া হবে।

মানবহিতৈষী হিসেবে ব্রিটিশ সরকার রায় বাহাদুর খেতাব দেয় রণদা প্রসাদ সাহাকে। মানবসেবায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিসরূপ স্বাধীনতার পর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক দেয়। তিনি আর পি সাহা নামেও সমধিক পরিচিত।

রণদা প্রসাদ সাহার পৈত্রিক নিবাস টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে। সেখানে তিনি একাধিক শিক্ষা ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। নারায়ণগঞ্জের খানপুরের সিরাজদিখানে ছিল রণদাপ্রসাদ সাহার বাড়ি।