খুবই রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে তিনি।পরিবারের এমন রক্ষণশীল মনোভাবের কারণে কখনও প্রেম করারও সাহস বা সময় হয়নি তার। অথচ দেশের ব্যান্ড জগতে জনপ্রিয় নারীমুখ তিনি। চ্যানেল আই অনলাইনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানালেন বাংলাদেশের অন্যতম ব্যান্ড তারকা মেহেরিন মাহমুদ।
পড়াশুনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যে। ছোট্ট বেলা থেকেই গান গাওয়ার শখ। বড় হয়ে তাই গানকেই বেছ নেন জীবন ও জীবিকা হিসেবে। ঢাবির ছাত্রী থাকাকালীন কখনও নিজে নিজে কোথাও যেতে পারতেন না তিনি। এমনকি কোনো প্রেমও করতে পারেন নি পরিবারের শাসনের ভয়ে।
১৯৯৮ সালে বিয়ে করেছেন। সেটাও পরিবারের ইচ্ছায় এবং পছন্দে। তবে অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ হলেও তারা বেশ সুখেই আছেন। ঘরে আছে এক মেয়ে এক ছেলে। মেয়ে নাভিন আর ছেলে আকিব। নিজে রক্ষণশীল পরিবেশে বড় হলেও বাচ্চাদের দিচ্ছেন পূর্ণ স্বাধীনতা। সন্তানরা যা পড়তে পায়, যা শিখতে চায় তাই পড়াচ্ছেন, শিখাচ্ছেন।
রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে হয়ে কীভাবে ব্যান্ড সংগীত জগতে এলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বললেন, তার পরিবারের শর্ত ছিলো আগে একটা ডিগ্রি নিতে হবে তার পর অন্য কিছু। পরিবারের সেই শর্তানুযায়ীই তিনি প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঢাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগ থেকে অনার্স ডিগ্রি নেন মেহেরিন। আর তার পরের অন্যকিছু হলো আজকের ব্যান্ড তারকা মেহেরিন, যা সে নিজে হতে চেয়েছিলো।
অবসরে বাচ্চাদের সঙ্গে সময় কাটাতে এবং বিকেলে গাড়ি নিয়ে ঘুরতে ভালোবাসেন। আর খাবার বিষয়ে গরুর মাংস দিয়ে ভুনা খিচুরি তার খুবই প্রিয়।
সংগীত জীবনে তিনি এ আর রহমানকে খুবই মান্য করেন। সংগীতের প্রতি তার আত্মমগ্নতা মেহেরিনকে মুগ্ধ করে। আর এ দেশের গানের জগতে নীনা হামিদ, শাহনাজ রহমাতুল্লাহর গান তার খুবই প্রিয়।
১৯৯২ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত বিটিভির সংবাদ পাঠিকা হিসেবেও কাজ করেছেন। তবে সেটাও নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে পরিবারের সবার মন রাখতে। পরে অবশ্য ছেড়ে দিয়ে এখন নিজের গান নিয়েই আছেন।
সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলে একটি কনসার্ট করার কথা রয়েছে তার। এই ঈদে তার একটি নতুন এলবামও আসছে।
মাঝখানে একটা বিতর্ক বের হয়েছিলো মেহেরিন মারা গেছেন। ওই সময়ে আসলে কী ঘটেছিলো এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানতেন না। খুবই বিচ্ছিরি কথা ছিলো সেটা। যারা এসব গুজব বের করে তারা আসলে ইডিয়ট।
আগে অনেক কনসার্ট করতেন কিন্তু কখনও কোনো ধরণের বাজে পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়নি। কিন্তু ইদানিং মানুষ অনেক খারাপ হয়ে গেছে বলে অভিযোগ তার। অনেকেই বিরক্ত করে, টিজ করে। আক্ষেপ করে বলেন, দিন দিন বুড়ো হয়ে যাচ্ছেন এখন আর এই সময় এসে এসব সহ্য করতে হয়। তিনি বলেন, এখন মানুষের মধ্য থেকে মূল্যবোধগুলো হারিয়ে যাচ্ছে।
ইদানিং তাকে মিডিয়ায় খুব একটা দেখা যায় না এমন প্রসঙ্গে বেশ ক্ষোভ নিয়েই তিনি বললেন, তার মনে হয় বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম বাংলাদেশী চ্যানেলগুলোই আসলে দেখেনা। তাহলে তাকে কীভাবে দেখতে পাবে তারা? তিনি বলেন, যখন ভারতে গিয়ে কনসার্ট করেন তখন ভারতীয় চ্যানেলগুলোর বরাতে বাংলাদেশের মানুষ তাকে দেখতে পায়।