বিশ্বসভ্যতায় যুদ্ধহীন একটা দিনও অতিবাহিত হয় নাই। যুদ্ধ অনিবার্য। যুদ্ধবাজ জেনারেলরা বিশ্বাস করেন, যুদ্ধ ছাড়া সভ্যতা আগায় না।
আরববিশ্বের রক্ষণশীল অবদমিত সংস্কৃতিতে যখন পশ্চিমা ঢেউ, আরব বসন্তের ফাঁকে গুটি বসন্তের মতো ঢুকে পড়লো এক ক্ষতিকর জীবাণু- যৌন জিহাদ। সঙ্গত কারণেই ১৪শ বছর আগের যৌন বাস্তবতা এখন অকার্যকর। দাসী সঙ্গম বা গনিমতের মাল ভোগ করাটাকেই যে ফ্যান্টাসি আকারে একুশ শতকের তরুণদের গেলানো যায়, এই আইডিয়া নিশ্চিত বাৎসায়নকেও হার মানায়! কামরুপকামাখ্যার যৌনগুরুরাও যেন আজ ইরাক-সিরিয়ার আইএস যোদ্ধা।
জিহাদে শহীদ হলে বিনা প্রশ্নে জান্নাত-তাই পাপবোধ থেকে মুক্তি পেতে তরুণরা জিহাদে আকৃষ্ট হয়। ওয়েস্টার্ন ফিলোসোফিতে বেড়ে ওঠা মুসলিম তরুণরা শুধুমাত্র পাপের অনুশোচনা থেকেই জিহাদে যাবে, এ আশাও করা বোকামি। তাই তাদের আকর্ষণ বাড়াতে হালাল সেক্সের এই আয়োজন। বিজ্ঞাপনটাও চমৎকার; সেক্স হবে, কিন্তু পাপ হবে না।
আইএস যুদ্ধ করছে বটে, তবে ওটা ইসলামি জিহাদ কি’না- সেটা ইসলামি বিশেষজ্ঞরাই ভালো বলতে পারবেন। তবে খলিফা বাগদাদী সাহেব কার হয়ে যুদ্ধ করছেন, এটা অবশ্য মোটামুটি পরিষ্কার হয়ে এসেছে। ইহুদি-নাসারা প্রেসক্রিপশনে ইসলামকে বিতর্কিত করতে, মুসলিমদের জেহাদকে হাস্যকর করে তুলতে যে এই সেক্স ট্রেডের কোনও বিকল্প নেই!
যুদ্ধে যৌনতার অনুপ্রবেশ ঘটলে সৈনিকরা চাঙ্গা হয়। এটা অনেক পুরোনো রণকৌশল। পদাতিক বহরে যতোই অত্যাধুনিক হোক অস্ত্রশস্ত্র, মেশিনগানের চেয়ে সনাতন পুরুষাঙ্গের গুরুত্ব অনেক বেশি। তবে জিহাদের মতো ধর্মযুদ্ধেও যে এই যৌনতার আর্বিভাব ঘটবে- এটা সম্ভবত ১৪শ বছরে কোনও ইসলামিস্ট স্কলারের ধারণায় ছিল না।
২০১৩ সালে প্রখম ‘জিহাদ আল-নিকাহ’ বা যৌন জিহাদের কথা শোনা যায়। আরব বসন্তের শুরু যে তিউনিশিয়া থেকে, সেখানকার সরকার প্রথম দাবি করে- আলজেরিয়া সীমান্ত লাগোয়া দুর্গম পার্বত্য এলাকায় ইসলামি জঙ্গিদের মনোবল চাঙ্গা করতে যৌন জিহাদে অংশ নিচ্ছে তিউনিশিয়ার মেয়েরা।
সেখান থেকেই এটা ছড়িয়ে পড়ে ইরাক-সিরিয়ায়। এই যৌন জেহাদকে জেনার মতো ১শ দোররা মারার শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে মনে করেন বেশিরভাগ মুসলিম চিন্তাবিদ।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)