বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ইন্টার পার্লামেন্টারী ইউনিয়ন (আইপিইউ) সম্মেলনকে প্রহসন হিসেবে দেখছে বিএনপি। একই সঙ্গে এই সম্মেলন ঢাকায় অনুষ্ঠিত হওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করে দলটি বলছে, যে দেশের পার্লামেন্ট জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না- গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে এবং নাগরিকদের মানবাধিকার লুণ্ঠিত, হত্যা, গুম, গ্রেফতার ও মিথ্যা মামলায় জনগণ জর্জরিত সেই দেশে আইপিইউ এর সম্মেলন একটা প্রহসন ছাড়া অন্য কিছু নয়।
রোববার দুপুরে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দীন সরকার বিএনপির পক্ষে এসব কথা বলেন।
আইপিইউ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী গণতান্ত্রিক দেশগুলোর প্রতিনিধিদের বিএনপির পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানালেও তিনি বলছেন, যে দেশের পার্লামেন্টে জনগনের নির্বাচিত প্রতিনিধি নেই সে দেশে বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোর সংসদ সদস্যদের এতো বিশাল সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়াটা বিস্ময়কর!।
এসময় তিনি বলেন, বিদেশী সংসদ সদস্যরা এদেশের পার্লামেন্টে জনগণের প্রতিনিধিত্বহীনতার বিষয় সম্পর্কে হয় জানেন না নয়তো তাদের ভুল তথ্য দেয়া হয়েছে।
জমিরউদ্দিন সরকার বলেন, এই সম্মেলন এটাই প্রমাণ করে যে, সারা বিশ্বে সংসদীয় শাসনব্যবস্থাই হচ্ছে এখনকার সময়ে দেশ পরিচালনার জন্য সর্বোত্তম পন্থা। অথচ দুঃখজনক হলেও সত্যি, বাংলাদেশের মানুষ সেই সর্বোত্তম সংসদীয় গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত। তিনি বাংলাদেশে সংসদীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে আইপিইউ সদস্যদের ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
সাবেক এই স্পিকার বলেন, এই মুহুর্তে বাংলাদেশে তথাকথিত যে পার্লামেন্ট বিদ্যমান রয়েছে তা নাগরিকদদের প্রতিনিধিত্ব করে না। কারণ, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে দেশের ৯৫ ভাগ মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি, যেখানে ১৫৪ জন সংসদ সদস্য বিনা ভোটে নির্বাচিত! সেটি ছিলো প্রহসনের নির্বাচন! একারণে অনুষ্ঠিত আইপিইউ সম্মেলনে বাংলাদেশের জনগণের কোন প্রতিনিধি নেই বলেও দাবি করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, ড. আব্দুল মঈন খান, তরিকুল ইসলাম, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধূরী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ প্রমুখ।।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ইন্টার পার্লামেন্টারী ইউনিয়ন (আইপিইউ) এর সম্মেলন চলছে। এতে অংশ নিচ্ছেন বিশ্বের ১৩১টি দেশের সংসদ সদস্য।
বাংলাদেশ ১৯৭২ সালে আন্তর্জাতিক এই ফোরামে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর এই প্রথম এই সংগঠনের সম্মেলনের আয়োজক হলো।