বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীর প্রথম খণ্ড ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’র প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর সমালোচনার মাধ্যমে শুরু করে একাত্তরের পরাজিত শক্তি ৭৫ এর প্রেক্ষাপট তৈরি করেছিলো। আর বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পর তার অনেক সহচর পরে খুনিদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। এরপর বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কে তারা সবাই মিলে গোয়েবলসীয় কায়দায় অনেক অপপ্রচার চালিয়েছে। সেখানে তিনি যেভাবে লিখেছেন বইতে সব সেভাবেই আছে| এই বইটি পড়ে নতুন প্রজন্ম যাতে বাংলাদেশ তৈরির প্রেক্ষাপট ও বাঙালি জাতির ওপর পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর চালানো শোষণ সম্পর্কে জানতে পারে তাই এই বইটি প্রকাশ করা হয়েছে। ’৭৫ এর পর থেকে চালানো অপপ্রচারের বিপরীতে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজের আত্মজীবনী প্রকাশের মাধ্যমে বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে সঠিক ইতিহাস পৌঁছে দেয়ার এ উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই। বইটির প্রকাশনা সূত্রে জানা যায়, ৩৩২ পৃষ্ঠার বইটিতে বঙ্গবন্ধুর ১৯৬৬ সাল থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত কারাস্মৃতি স্থান পেয়েছে। বঙ্গবন্ধু তার প্রতিদিনের রাজনৈতিক ও অন্যান্য কর্মকাণ্ডগুলো ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ করতেন। এমনকি কারাজীবনেও তিনি এটা অনুশীলন করতেন। কিন্তু ১৯৬৯ সালের ডিসেম্বরে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়ার সময় তৎকালীন পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধুর লেখা ছয়টি ডায়েরি জব্দ করে। পরে তার চারটি ফেরত দেয়। অবশিষ্ট দুইটি ডায়েরির একটি ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর স্পেশাল ব্রাঞ্চের সহযোগিতায় উদ্ধার করা হয়। এই দু’টি ডায়েরী নিয়ে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক জেল জীবন নিয়ে বইটি প্রকাশের উদ্যোগ নেয়ায় বাংলা একাডেমিকে আমরা অভিনন্দন জানাই। আমরা মনে করি, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এ ধরণের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। কেননা আজ বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে, আমাদের দেশ মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা থেকে কোনোভাবেই দূরে সরে যেত না। সোনার বাংলার উন্নতি করতে এত বছর সময় লাগতো না। তিনি বেঁচে থাকলে অনেক আগেই দেশের সব সমস্যার সমাধান হয়ে যেত। যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশে বঙ্গবন্ধুর মাত্র কয়েক বছরের শাসনামলে দেশ প্রবৃদ্ধির মুখ দেখেছে। এরপর অনেক বছর দেশের প্রবৃদ্ধি কখনো বাড়েনি। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর এসব অর্জনের ইতিহাসের বদলে তাকে নিয়ে খুনিরা প্রজন্মকে অনেক মিথ্যা ইতিহাস শুনিয়েছে। তাই বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাস জানতে বঙ্গবন্ধুর এই আত্মজীবনী পড়া উচিৎ বলে আমরা মনে করি। পাশাপাশি জাতিকে স্বাধীনতা এবং এর পরবর্তী সময়ের প্রকৃত ইতিহাস জানাতে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গবেষণার এ ধরণের উদ্যোগ আরো বাড়াতে আমরা সংশ্লিষ্ট মহলের কাছে আহ্বান করছি।