চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

যে কারণে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ

লাগামহীনভাবে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। মাত্র এক মাসের ব্যবধানে দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, চলতি সপ্তাহে দাম কমার সম্ভাবনা তো নেই বরং বাড়বে।

দাম বাড়ার কারণ হিসাবে পাইকারী ও খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ী বলছে, একদিকে বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশে বৃষ্টির কারণে প্রচুর পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। অন্যদিকে মোকামগুলোতে বড় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে মজুদ রেখেছে। এছাড়া আমদানি খরচও বেড়েছে। ফলে হু হু করে দাম বেড়েছে।

শুক্রবার কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল ও কাঁঠালবাগান বাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে এ সব তথ্য জানা গেছে।

বাজারে খুচরা পর্যায়ে দেশি পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৮৫ থেকে ৯০ টাকা আর ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। আর পাইকারী পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে দেশি পেঁয়াজের পাল্লা (৫ কেজি) ৪শ টাকা আর ভারতীয় পেঁয়াজের পাল্লা সাড়ে ৩শ টাকায়।

সরকারি বাণিজ্য সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দৈনিক বাজার পরিস্থিতির সর্বশেষ ২৩ অক্টোবরে প্রস্তুত করা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিকেজি পেঁয়াজে দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। আর এক মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। যা শতাংশের হারে প্রায় ৫৫ শতাংশ।

খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকাররাদের কাছ থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তাই বিক্রি করতে হচ্ছে বেশি দামে।

কাঁঠালবাগানের মুদি দোকানদার আতিক চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘কারওয়ান বাজার থেকে পেঁয়াজ কিনে আনি। সেখানে দাম বেড়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজে ১৮ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। ফলে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৮৫ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।

দাম নিয়ে মোকামের ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে এমন অভিযোগ করে পাইকারীরা জানান, বৃষ্টির কারণে ভারতে কিছুটা দাম বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে দেশি পেঁয়াজে। তবে বড় ব্যবসায়ীরা সুযোগ বুঝে অধিক মুনাফার আশায় দেশি পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছেন।

কারওয়ান বাজারের ৪৩ নং আড়ত মিনহাজ বাণিজ্যালয়ের হৃদয় হোসেন চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, সম্প্রতি বৃষ্টির কারণে ফরিদপুর, পাবনাসহ উৎপাদনকারী কয়েকটি এলাকায় প্রচুর পরিমাণে পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে।

এছাড়া ভারতের পেঁয়াজের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভর করতে হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মত ভারতেও বৃষ্টিতে পেঁয়াজের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। তিনি আরো বলেন, দেশটিতে প্রায় ২০ জাতের পেঁয়াজের উৎপাদন হয়। তবে বাংলাদেশে যে কয়েক জাতের পেঁয়াজ আসে তার মধ্যে সাউথ, বেলুরিয়া পেঁয়াজ অন্যতম। কিন্তু এই দুটি জাতের পেঁয়াজই নষ্ট হয়েছে বেশি। সেজন্য দাম বেড়েছে বলে মনে করেন এই ব্যবসায়ী।

একই মার্কেটের কুতুবপুর বাণিজ্যালয়ের এক বিক্রয়ক্রর্মী বলেন, বৃষ্টি ছাড়াও মোকামের ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে মাল মজুদ করে। তারা নিজেরাই সংকট দেখিয়ে কয়েকদিন পেঁয়াজ বিক্রি করে না। তখনই দাম বেড়ে যায়।

জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) মার্কেট ফেডারেশনের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব শেখ শামসুল আলম বুলবুল চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, দেশে পেঁয়াজের সবচেয়ে বড় মোকাম হচ্ছে রাজশাহীর তাহেরপুর ও বানেশ্বর, ফরিদপুরের গোয়ালন্দ। এছাড়া পাবনায়ও একটি মোকাম রয়েছে। এসব মোকামে মাঝে মাঝে পেঁয়াজের সংকট দেখা দেয়। তখন পাইকারদের বেশি দাম দিয়ে কিনতে হয়।

মোকামের আড়তদাররা সিন্ডিকেট করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে প্রায়ই এমন অভিযোগ শোনা যায়।