ইমেইল, ফেসবুক কিংবা অন্যান্য ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপে হরহামেশাই একে অন্যের সাথে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের লিংক শেয়ার করে থাকে। তবে সাইবার আক্রমণের জন্যও অনেক সময় এই পদ্ধতি ব্যবহার করে হ্যাকাররা।
অপরিচিত কারও কাছ থেকে ইমেইল আসলো আর তাতে থাকা লিংকে ক্লিক করার কিছু সময় পর দেখলেন আপনার ইমেইল অ্যাকাউন্ট বেহাত হয়ে গেছে কিংবা কম্পিউটারে জেঁকে বসেছে র্যানসমওয়্যার। এমন পরিস্থিতিতে কে পড়তে চায়।
একটু সচেতন হলেই এ ধরনের পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব। কোনো অপরিচিত বা নতুন ওয়েবসাইট বা অন্যের কাছ থেকে পাওয়া কোনো লিংকে প্রবেশের আগেই তাতে কোনো ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার আছে কিনা, সেটি খুব সহজেই যাচাই করে নেওয়া সম্ভব, তাও আবার কয়েক ক্লিকেই।
কোনো লিংক নিরাপদ কিনা তা অনলাইনে যাচাই করা যাবে এমন কয়েকটি ওয়েবসাইট সম্পর্কে জেনে নিন-
১. এভিজি থ্রেটল্যাবস: ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার রয়েছে, এমন কোনো ওয়েবপেজ শনাক্ত করার ক্ষেত্রে বেশ কার্যকর ওই ওয়েবসাইটটি। ম্যালওয়ারের পাশাপাশি আরও বিভিন্ন ধরনের অনলাইন থ্রেট সম্পর্কেও জানাবে এই টুলটি। ওয়েবসাইটটিতে আরও পাওয়া যাবে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ওয়েবসাইটের তালিকাও।
২. ক্যাসপারস্কি ভাইরাস ডেস্ক: সাইবার সিকিউরিটির জন্য রাশিয়ার ক্যাসপারস্কি বেশ সুপরিচিত এবং জনপ্রিয় একটি নাম। অ্যান্টিভাইরাস এবং ইন্টারনেট সিকিউরিটি ছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির আরও বেশ কিছু টুল রয়েছে সাইবার সুরক্ষার জন্য। এর মধ্যে একটি হলো ‘ভাইরাস ডেস্ক’। এই অনলাইন টুল ব্যবহার করে কোনো ওয়েবপেজে ভাইরাস, ম্যালওয়্যার বা ফিশিং টুল আছে কিনা তা যেমন জানা যাবে, তেমনি কোনো একটি ফাইল আপলোড করে জানা যাবে তাতে ক্ষতিকর কোনো প্রোগ্রাম আছে কিনা। কোনো কারণে যদি মনে হয় ভাইরাস ডেস্ক ভুল তথ্য দিচ্ছে, তাও জানানোর ব্যবস্থা আছে এখানে।
৩. স্ক্যান ইউআরএল: কোনো ওয়েবসাইটে লুকানো ক্ষতিকর প্রোগ্রাম শনাক্ত করার ক্ষেত্রে এই ওয়েবসাইটটি বেশ কার্যকর। বেশ কয়েকটি ভিন্ন ভিন্ন টুল ব্যবহার করে প্রাপ্ত ফলাফল ব্যবহারকারীর সামনে হাজির করে স্ক্যান ইউআরএল। এর পাশাপাশি ওয়েবসাইটটি সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্যও দিয়ে থাকে এই টুলটি। স্ক্যান করার পর প্রতিটি ফলাফলের জন্য একটি আলাদা লিংক পাওয়া যাবে যা চাইলে অন্যদের সাথে শেয়ার করার সুযোগ থাকছে।
৪. ফিশট্যাংক: ধরুন আপনি কোনো একটি ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখলেন হুবহু ফেসবুকের মতো একটি লগইন পেজ। কিছু না বুঝেই সেখানে ফেসবুকের ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে দেখলেন কোনো কিছুই আসছে না। কিছুক্ষণ পর খেয়াল করলেন ফেসবুক অ্যাকাউন্টে আর লগইন করতে পারছেন না। এমন হয়ে থাকলে আপনি ফিশিংয়ের শিকার হয়েছেন। ফিশট্যাংক নামের এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এ ধরনের বিভিন্ন ফিশিং ওয়েবসাইট শনাক্ত করা যাবে। তবে আগেই জানিয়ে রাখি, এখানে কোনো ওয়েবসাইটের লিংক দেওয়ার পর একটি ট্র্যাকিং নাম্বার দেওয়া হবে। ফিশট্যাংক কর্তৃপক্ষ ম্যানুয়ালি ওয়েবসাইটটি যাচাই করে দেখবে এটি আদৌ ফিশিং সাইট কিনা। একটি নির্দিষ্ট সময় পর ট্র্যাকিং নাম্বার ব্যবহার করে ফলাফল জানা যাবে। তবে একই ওয়েবসাইট যদি আগেও স্ক্যান করা হয়ে থাকে, তাহলে তাৎক্ষনিকভাবেই জানা যাবে।
৫. গুগল ট্রান্সপারেন্সি রিপোর্ট: গুগলের এই টুলটি ব্যবহারের মাধ্যমেও জেনে নিতে পারবেন কোনো ওয়েবসাইট ঝুঁকিপূর্ণ কিনা। ম্যালওয়ারের পাশাপাশি ফিশিং রিস্ক সম্পর্কেও তথ্য দেবে গুগল ট্রান্সপারেন্সি রিপোর্ট।