স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে রাজধানীতে যে আনন্দ শোভাযাত্রা হয়েছে তার প্রভাব পড়েছে জনজীবনে। রাজধানীর অনেক সড়কই দেখা যায় পাবলিক পরিবহন শূন্য। ফলে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে সাধারণ নাগরিকদের।
উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সাফল্য উদযাপন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে সরকার। আর এ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে রাজধানীর নির্ধারিত ৯টি স্থান থেকে ৫৭টি মন্ত্রণালয়/বিভাগ এবং অধীন দফতরগুলোর কর্মকর্তা/কর্মচারী ও সাধারণ জনগণ ব্যানার, ফেস্টুনসহ শোভাযাত্রা নিয়ে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেছেন।
শোভাযাত্রার কারণে রাস্তা ছিলো অনেকটা পাবলিক পরিবহন শূন্য। তাই অফিসগামী লোকজনসহ রাজধানীর বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়া নাগরিকদের পড়তে হয় দুর্ভোগে।
বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত রুটের বাসের খোঁজ। অনেক সময় পর পর একটি বাস আসলেও তাতে ঠেলাঠেলি করে উঠেও জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। নারী-বয়স্ক এবং শিশুরা উঠতেই পারছে না। এই সুযোগে সিএনজি অটোরিক্সাসহ ভাড়ায় চালিত অন্যান্য বাহন হাঁকছে নির্ধারিত ভাড়ার কয়েকগুন। যে অল্প সংখ্যক বাস চলছে, রাস্তা ফাঁকা থাকার অজুহাতে তারাও নিচ্ছে বাড়তি ভাড়া। নিরুপায় হয়ে কেউ কেউ এ ধরণের যানবাহনে যাচ্ছেন। কেউ কেউ দাঁড়িয়ে থাকছেন বাসের জন্য।
শাহবাগ থেকে মিরপুর ১০ এ যাবেন আতাউর রহমান। বিকেল তিনটার দিকে পেশায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আতাউর চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: বেলা দেড়টা থেকে দাঁড়িয়ে আছি এখানে, কোন বাস পাচ্ছি না।সিএনজিতে যে যাবো সে সামর্থ্য আমার নেই। কারণ অন্যান্য সময় ২০০ টাকা দিয়ে যেতে পারলেও আজ তারা ৪০০-৫০০ টাকা চাচ্ছে। তাই দাঁড়িয়ে বাসের অপেক্ষা করা ছাড়া আর উপায় কী?
কারওয়ান বাজার মোড়ে বাসের জন্য অপেক্ষারত চল্লিশোর্ধ্ব নারী রোকসানা বেগম চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: আমি আমিনবাজার যেতে চাই। কিন্তু বাস নাই। অনেক্ষণ পর পর একটা বাস যদিও আসে ভিড়ের কারণে তাতে উঠতে পারছি না।
শোভাযাত্রার কারণে দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম এবং চারপাশের বিভিন্ন সড়কে যান চলাচলে সমস্যা হতে পারে বলে আগেই জানানো হয়েছিল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে। এজন্য নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া শোভাযাত্রার সময় শাহবাগ, কাকরাইল মসজিদ, নাইটিঙ্গেল, ফকিরাপুল, শাপলা চত্বর, গুলিস্তান, ফুলবাড়িয়া, চানখারপুল, বকশিবাজার, পলাশী, নীলক্ষেত এলাকা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়।
কিন্তু এসব এলাকার সমস্যার কম বেশি প্রভাব পড়ে পুরো রাজধানী জুড়েই। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় জনসাধারণকে।