ইয়ন মরগানের সঙ্গে আমি খুব বেশি দ্বিমত পোষণ করছি না। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার কাছে পরাজয়ের পর তিনি বলেছেন, ইংল্যান্ড ভাগ্য ছাড়াই লর্ডসে ভালো বোলিং করেছে। আমি মনে করি না, তারা সেটা করেছে।
হ্যাঁ, টস জেতার পর কিছু সময় ইংল্যান্ড নিখুঁত বোলিংয়ের অবস্থানে গিয়েছিল, কিন্তু সে বলগুলোর কয়টি স্টাম্পে লাগত? মনে হয় খুব বেশি নয়।
সম্ভবত মরগান তাদের বোলারদের শাস্তি দেয়ার পরিবর্তে শুধু আগলে রাখার চেষ্টা করছেন। কারণ এখনো তাদের বিশ্বকাপ সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়নি। তবে তাদের অবস্থা এখন অনেকটাই টলটলায়মান।
অস্ট্রেলিয়ার দুই বাঁহাতি পেসার মিচেল স্টার্ক ও জেসন বেহেরেনডর্ফ ইংল্যান্ডকে দেখিয়েছেন কীভাবে তাদের বল করা উচিত ছিল। ফুল-লেন্থে বল ফেলে ব্যাটসম্যানদের এগিয়ে আসতে বাধ্য করেছেন এবং এলবিডব্লিউর বিপদ বাড়িয়েছেন।
অস্ট্রেলিয়া যখন কন্ডিশনের সঙ্গে ভালোভাবে মানিয়ে নিয়েছে, তখন ইংল্যান্ড সেটা করতে পারেনি। অজিরা আগের ম্যাচগুলোতে নিয়মিত খেলা নাথান কোল্টার-নাইলকে রেখে বেহেরেনডর্ফকে একাদশে নিয়েছে।
শুধু তাই নয়, প্যাট কামিন্সকে রেখে বেহেরেনডর্ফের হাতে নতুন বল তুলে দিয়েছে। কারণ তারা (অজি) জানত, তাদের এমন কাউকে লাগবে, যিনি সুইং দিয়ে ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের প্যাডে বল লাগাতে পারবেন। কাজটা তীরের মতো সোজা করেই করেছেন বেহেরেনডর্ফ।
এদিকে, ইংল্যান্ড এই টুর্নামেন্টে গতিশীল এবং হিট দ্য ডেক বোলারদের সাথে নিয়ে চলছে এবং ডেভিড উইলিকে আগেই দল থেকে বের করে দিয়েছে, যিনি এমন অবস্থায় বলকে সুইং করাতে পারেন। তবে এটা বলা যাবে না যে, ক্রিস ওকস, মার্ক উড বা জফরা আর্চাররা সেটা করতে পারেন না বা পারবেন না।
কথা হল, ইংল্যান্ড এখন বেশ ক্ষয়ক্ষতি পরিস্থিতিতে আছে। অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের শুরুতে যখন পিচ কিছুটা স্যাঁতসেঁতে ছিল, তখন উড ও আর্চারদের লড়াই করতে হচ্ছিল। তবে এটাও মনে হতে পারে যে, পিচ শুকিয়ে গেলে কীভাবে তারা আরও ভালো হয়ে উঠল।
বোলাররা ভালো করল, কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। টসে জিতে যখন অস্ট্রেলিয়াকে প্রথমে ব্যাটিং দেয়া হল এবং অস্ট্রেলিয়া তাদের প্রথম উইকেট হারানোর আগে স্কোরবোর্ডে ১২৩ রান তুলে ফেলল, তখনই ম্যাচের অনেকটা শেষ হয়ে গেল।
জেসন রয়কে হারানোটা হতাশাজনক বলে প্রমাণিত হয়েছে। কারণ তাকে নিয়ে ইংল্যান্ড উড়ন্ত সূচনার একটি অভ্যাস গড়ে ফেলেছিল। যেটা আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর সঙ্গে প্রতিপক্ষের দিক থেকে খেলাটা নিজেদের পক্ষে নিতে সাহায্য করত ইংল্যান্ডকে। কিন্তু গত দুটি হারা ম্যাচেই ইংলিশরা শুরুতে উইকেট হারিয়েছে।
ইংল্যান্ড দ্বি-পক্ষীয় সিরিজ এবং বহুজাতিক টুর্নামেন্ট খেলার মধ্যে একটা পার্থক্য খুঁজে বের করতে সাহায্য করেছে। কোনো বহুজাতিক টুর্নামেন্ট খেলার সময় ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন শক্তির দলের মুখোমুখি হতে হয়। এক ম্যাচে যেমন শ্রীলঙ্কার স্পিনের মুখে পড়বে তো অন্য ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার পেস ঝড়ের সঙ্গে সুইং সামলাতে হবে। কিন্তু ইংল্যান্ড এর কোনোটার সঙ্গেই এঁটে উঠতে পারেনি।