বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সংগঠন যুবলীগ। যার জন্মই হয়েছিল জনতার প্রয়োজনে। ১৯৭১ পরবর্তী বাংলাদেশের সামাজিক-অর্থনৈতিক পটভূমি ছিল ভঙ্গুর। সংস্কারের প্রয়োজন পড়েছিল প্রতিটি ক্ষেত্রেই। বিচক্ষণ ও দূরদর্শী রাষ্ট্রনেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টের পেলেন যুব ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা।
এরপর পিতা মুজিবের নির্দেশে ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর শেখ ফজলুল হোক মনির নেতৃত্বে গঠিত হয় বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ। সংগঠনের প্রতিটি সদস্যের চোখে মুখে লেগে ছিল অঙ্গীকার। যে অঙ্গীকার দেশ বিনির্মাণের,যে অঙ্গীকার পিতা মুজিবের মুখ উজ্জ্বল করবার।
এরপরের ইতিহাস তো সবারই জানা। ৭৫ এ সপরিবারের হত্যা করা হয় বাংলাদেশের কল্পকার শেখ মুজিবুর রহমানকে। ঘাতকের বুলেট থেকে রক্ষা পাননি বাংলাদেশ যুবলীগের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলুল হক মনিও। ৭৫ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট স্বাধীনতাপন্থিদের অনুকূলে ছিল না। যুদ্ধপরাধী ও জাতিরপিতার হত্যাকারিদের পুনর্বাসন-প্রমোশনে দেশটাকে বানিয়ে রাখা হয়েছিল সাক্ষ্যাত দোযখ। তবুও প্রতিবাদে মুখর ছিল শেখ মুজিবের সন্তানসম সংগঠন বাংলাদেশ যুবলীগ।
সমস্ত ষড়যন্ত্র-কুপরিকল্পনাকে পেছনে ফেলে ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। সে যাত্রায় বিশ্বস্ত ছায়াসঙ্গী হয়ে পাশে থেকেছে বাংলাদেশ যুবলীগ।
সম্প্রতি যুবলীগের নাম এসেছিল ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে। এখানে যুবলীগ বললে বেশ খানিকটা ত্রুটি থেকে যাবে।কয়েকলক্ষ যুবলীগ কর্মীর সাথে বেইনসাফী করা হবে, যারা যুবলীগ ভালোবাসে, বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসে, শেখ হাসিনাকে ভালোবাসে, ভালোবাসে বাংলাদেশকে।আর যে ভালবাসতে জানে সে কখনও অন্যায় করে না। যুবলীগের গুটিকয়েক লোক কালি মাখাতে চেয়েছিল সংগঠনটির
প্রতিটা অক্ষরে। কিন্তু বিচক্ষণ নেত্রী শেখ হাসিনা তো অন্যায়ের সাথে আপোস করেননি কখনও। তিনি কেন মেনে নেবেন অন্যায়? মানেন নি। বহিস্কার করেছেন অপরাধের সাথে জড়িত প্রত্যেককে।
এরপর এক নতুন চমক দেখলো বাংলাদেশ। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন তিনি। ছাত্রদের শেখাতেন দেশ গড়ার বানী। তার হাতেই প্রধানমন্ত্রী তুলে দিলেন যুবলীগের ভার। শেখ ফজলে শামস পরশ সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পেলেন মাইনুল আহসান খান নিখিলকে।
একটা বিশাল ধাক্কায় মনোবল ভাঙা যুবলীগকে টেনে তুললেন ভালোবাসা ও একাগ্রতায়।
সম্প্রতি ২০১ সদস্যবিশিস্ট কার্যনির্বাহী কমিটি ও ২০০ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে তরুণদের জয়জয়াকার। এটা সম্ভবত সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ। যে পরিকল্পনায় জাতির পিতা যুবলীগ তুলে দিয়েছিলেন শেখ মনির হাতে হয়তো তেমনই কোন পরিকল্পনা নিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা যুবলীগকে তুলে দিয়েছেন শেখ মনির বড় পুত্র শেখ পরশের
হাতে। আমি বিশ্বাস করি এই নেতৃত্বের মেধায় মানুষের হৃদয়ে সর্বোচ্চ স্থান দখল কর নেবে বাংলাদেশ যুবলীগ। আমি বিশ্বাস করি এই নেতৃত্ব বিনির্মাণের অহংকারে আনন্দিত করবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)