যুক্তরাষ্ট্র ও সাউথ কোরিয়ার বিরুদ্ধে নির্বিচারে পরমাণু হামলার হুমকি দিয়েছে নর্থ কোরিয়া। সোমবার থেকে শুরু হওয়া উভয় দেশের যৌথ মহড়া শুরু করলে এ হামলা চালানোর হুমকি দেওয়া হয়। নর্থ কোরিয়ার ক্ষমতাশালী জাতীয় প্রতিরক্ষা কমিশন দেশটির সুপ্রিম কমান্ড অফ দ্যা কোরিয়ান পিপলস আর্মি বা কেপিএ’র বরাত দিয়ে দেওয়া বিবৃতিতে এ হুমকি দিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, আগ্রাসন এবং যুদ্ধে যাদের আগ্রহ নির্বিচারে পরমাণু হামলা তাদেরকে নর্থ কোরিয়ার সামরিক ক্ষমতা দেখিয়ে দেবে। বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র এবং সাউথ কোরিয়ার যৌথ সামরিক মহড়াকে অনুশীলনের নামে পরমাণু যুদ্ধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
নর্থ কোরিয়া বোতাম টেপা মাত্রই শত্রুরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে এবং উস্কানি সৃষ্টিকারী ঘাঁটিগুলো আগুনের সাগরে ঢেকে যাবে এবং মুহূর্তের মধ্যেই ছাইয়ে পরিণত হবে বলেও এতে হুমকি দেওয়া হয়েছে।
নর্থ কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন দেশটির সামরিক বাহিনীকে যেকোনো সময় পরমাণু বোমা ব্যবহারের জন্য তৈরি থাকার নির্দেশ দেওয়ার পরই এ হুমকি দেওয়া হলো।
এদিকে ‘কি রিজলভ’ বা ‘ফোল ঈগল’ নামের মার্কিন-সাউথ কোরিয়া যৌথ মহড়া শুরুর আগে আজ(সোমবার) খুব ভোরে এ হুমকি দেওয়া হলো। এ মহড়া আজই শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
এ মহড়া এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত চলবে। ২০০৮ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র এবং সাউথ কোরিয়া প্রতিবছর বার্ষিক এ মহড়া চালিয়ে আসছে। অবশ্য গত বছর মহড়ায় দুই দেশের যে পরিমাণ সেনা অংশ নিয়েছিল এবার তার চেয়ে চার গুণ বেশি সেনা অংশ নেবে। সাউথ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, এই মহড়ায় ১৭ হাজার মার্কিন ও ৩ লাখের বেশি সাউথ কোরিয়ান সেনা অংশ নেবে।
এবারের মহড়ায় নর্থ কোরিয়ার সীমান্ত পেরিয়ে দেশটির গভীরে ঢুকে অস্ত্র গুদামগুলোতে হামলা চালানোর অনুশীলন করা হবে। একই সঙ্গে চীন ও রাশিয়ার সীমান্তে বিশেষ বাহিনী মোতায়েন করার বিষয়টি এ মহড়ার অংশ হিসেবে থাকবে।
নর্থ কোরিয়ার মিত্র দেশ চীন, রাশিয়া এবং পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হলে তা যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সে জন্য এ দুই দেশের সীমান্ত বন্ধ করে দিতে হবে বলে মার্কিনিরা মনে করে।
এর পাশাপাশি মার্কিন ও সাউথ কোরিয়ার সেনারা দুর্যোগ মোকাবেলা নিয়ে একটি উভচর মহড়াও চালাবে। অবশ্য যৌথ মহড়ার বিরুদ্ধে পিয়ংইয়ংয়ের হুমকি নতুন কিছু নয়। সাধারণত এ ধরনের মহড়ার কঠোর নিন্দা ও সমালোচনা করে থাকে সাউথ কোরিয়া।
মাত্র দুদিন আগেেই ‘যখন-তখন’ ব্যবহারের জন্য পরমাণু অস্ত্র প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন নর্থ কোরিয়ার নেতা কিম জং উন।
পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে যাওয়ায় গত বুধবার নর্থ কোরিয়ার ওপর আরোপিত অবরোধ আরও জোরদার করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।
নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ি নর্থ কোরিয়া থেকে আসা এবং দেশটির উদ্দেশে রওনা করা সব
জাহাজে তল্লাশী চালানোসহ ১২ টি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভূক্ত করা হয়েছে।