ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা আন্দোলন নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও)-এর ওয়াশিংটন কার্যালয় বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জবাবে প্রতিষ্ঠানটি আবার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান সম্পর্ক আটকে দেয়ার পাল্টা হুমকি দিয়েছে।
মার্কিন প্রশাসন জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য যেসব আইনি শর্ত মেনে চলতে হয়, পিএলও সম্ভবত তার ২/১টি লঙ্ঘন করছে। তাই দেশটিতে এ সংগঠনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হতে পারে।
এর জবাবে জনপ্রিয় সামাজিক মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটারে পোস্ট করা এক ভিডিওবার্তায় পিএলও-এর মহাসচিব সায়েব এরাকাত বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ একেবারেই ‘অগ্রহণযোগ্য’।
আমেরিকান আইন অনুসারে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ইসরায়েল ইস্যুতে তদন্ত চালানোর জন্য কোনোভাবেই আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে চাপ দিতে পারবে না। আর সেখানে রাজধানী ওয়াশিংটনে ১৯৯৪ সাল থেকে লাইসেন্স নিয়েই পিএলও অফিস খুলে কাজ চালাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরণের কার্যালয় চালানোর জন্য ছয় মাস পর পর লাইসেন্স নবায়ন করতে হয় পররাষ্ট্র বিভাগের কাছ থেকে। এই প্রথম মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগ পিএলও’র কার্যালয় চালানোর লাইসেন্স নবায়ন করতে অস্বীকৃতি জানালো।
পররাষ্ট্র বিভাগের এক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) সম্পর্কে ‘ফিলিস্তিনি নেতাদের দেয়া কিছু বক্তব্য’কে লাইসেন্স নবায়ন না করার কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন।
গত সেপ্টেম্বরে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস জাতিসংঘে বলেন, ফিলিস্তিনিরা আইসিসি’র প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে যেন আদালত ইসরায়েলিদের অবৈধ বসতি স্থাপন এবং ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর প্রতি সহিংস আচরণে সম্পৃক্ততার কারণে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চালান এবং তাদের বিচার করেন। আব্বাসের এই বক্তব্যকে কারণ উল্লেখ করে লাইসেন্স নবায়ন না করার এ সিদ্ধান্ত নেয়া হলো।
মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগ জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাতে এখন ৯০ দিন সময় আছে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য যে, তিনি আদৌ পিএলও’কে যুক্তরাষ্ট্রে কার্যালয় রেখে কাজকর্ম পরিচালনা করতে দেবেন কিনা। তিনি পিএলও’র অফিস রাখার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন যদি তার মনে হয়, ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলের সঙ্গে সরাসরি এবং অর্থপূর্ণ আলোচনায় যেতে আগ্রহী।
যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্তে ‘গভীরভাবে বিস্মিত’ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন মাহমুদ আব্বাস। এ সিদ্ধান্ত ‘আমেরিকান-আরব সম্পর্কের জন্য বিপজ্জনক পরিণতি বয়ে আনবে’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।