রাজনীতি, শিল্প-সংস্কৃতি ও অধিকার আদায়ের সংগ্রামে স্থায়ী ও গুণগত প্রভাব রেখেছিলো ৫২’র ভাষা আন্দোলন। মুসলিম লীগকে মোকাবিলার জন্য আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গঠিত হয় যুক্তফ্রন্ট।
৫৪’র নির্বাচনে মুসলিম লীগের ভরাডুবি ঘটিয়ে যুক্তফ্রন্ট একচেটিয়া বিজয় অর্জন করে। এ জয় অনুপ্রেরণা যোগায় স্বাধিকারের আন্দোলনে।
৫২’র ভাষা আন্দোলনের পরও পূর্ব বাংলার সম্পদ কেড়ে নিয়ে কত তাড়াতাড়ি পশ্চিম পাকিস্তান গড়ে তোলা যায় সেই চেষ্টায় ব্যস্ত তখন মুসলিম লীগ সরকার। সেসময় নির্বাচনে মুসলিম লীগকে পরাজিত করার লক্ষ্য নিয়ে ১৯৫৩ সালের ৪ ডিসেম্বর গঠিত হয় যুক্তফ্রন্ট।
মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ অন্য নেতারা একুশ দফার ভিত্তিতে যুক্তফ্রন্টের যে নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন করেন সত্যিকার অর্থেই তা ছিলো জনগণতান্ত্রিক রাজনীতির মুক্তিসনদ।
১৯৫৪ সালের ৮ থেকে ১২ মার্চ অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মুসলিগ লীগের ভরাডুবি ঘটিয়ে ২৩৭টি আসনের মধ্যে ২২৩টি পায় যুক্তফ্রন্ট। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ পায় ১৪৩টি আসন। শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের নেতৃতে গঠিত হয় যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভা।
মন্ত্রিসভা গঠনের দু মাসের মধ্যেই বিচ্ছিন্নতাবাদের অভিযোগে কেন্দ্রীয় সরকার ৯২-ক ধারা জারি করে হক মন্ত্রিসভা বাতিল করে পূর্ববঙ্গে কায়েম করে গভর্নরের শাসন। তারা একুশ দফার গণতান্ত্রিক দাবির কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিলেও স্বাধীন বাংলার স্বপ্নকে সঙ্গী করে মুক্তিকামী বাঙালিরা ৬৯’র গণ অভ্যুত্থান পর্যন্ত একের পর এক আন্দোলনে যুক্ত হয়ে পৌঁছে যায় মুক্তির দ্বারপ্রান্তে।
৫৪’র যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে একচেটিয়া জয়ের পর থেকে বাঙালির জোটবদ্ধ শক্তিতেই ৭০ এর নির্বাচনে বিপুলভাবে জয়ী হয় বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ যা পরিণতি পায় মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে।
আরও দেখুন ভিডিও রিপোর্টে: