টেক জায়ান্ট গুগল তার কর্মীদের জন্য নতুন একটি আচরণবিধি ইস্যু করেছে, যার মূল কথা হলো: যা করতে বেতন দেয়া হচ্ছে মুখ গুঁজে তাই করো, অকাজে সময় নষ্ট করো না!
শুক্রবার একটি মেমোর মাধ্যমে গুগল তার প্রায় লাখখানেক কর্মীর উদ্দেশে কিছু নীতিমালা পাঠায়। সেখানে লেখা আছে তারা কোন কাজটি করতে পারবেন আর কোনটি করতে পারবেন না।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, এখন থেকে আর গুগল কর্মীরা অফিস প্রাঙ্গণে রাজনীতি, সংবাদ বা কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত নয় এমন অন্য কোনো বিষয় নিয়ে মুক্ত আলোচনা করতে পারবেন না। এছাড়া কাউকে গালি দেয়া, ব্যঙ্গ করা বা হয়রানি করা নিষিদ্ধ।
তবে অফিসে কাজ সম্পর্কিত এবং বাস্তবনির্ভর আলোচনা করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে অফিস প্রাঙ্গণে আচরণবিধি ভঙ্গকারী বক্তব্য বা আচরণ কেউ করলে তার বিরুদ্ধে ম্যানেজারের নেতৃত্বে ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগও রাখা হয়েছে।
গুগলের ওয়েবসাইটে পোস্ট করা মেমোতে বলা হলেছে: ‘আমাদের প্রথম দায়িত্ব হচ্ছে আমাদের প্রত্যেককে যে কাজের জন্য চাকরি দেয়া হয়েছে সে কাজ আমরা করব, কাজের সঙ্গে সম্পর্ক নেই এমন কোনো বিষয়ে বিতর্ক করে কাজের সময়টুকু নষ্ট করব না। এমন সব আলোচনা এড়িয়ে চলব যা কর্মপরিবেশ ব্যাহত করে বা অন্য কোনোভাবে গুগলের কর্মক্ষেত্র নীতিমালা লঙ্ঘন করে। এ ধরনের নীতি ভঙ্গকারী আলোচনার ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে ম্যানেজারদের আহ্বান জানানো হচ্ছে।
এতদিন পর্যন্ত গুগল বিখ্যাত ছিল তার স্বাধীনতাপ্রিয় ও কর্মীবান্ধব কর্মপরিবেশের জন্য। কর্মীদেরকে সবসময়ই ব্যক্তিগত প্রজেক্ট এবং নতুন আইডিয়া বের করার পেছনে তাদের মোট কর্মঘণ্টার ২০ শতাংশ দেয়ার জন্য উৎসাহিত করে এসেছে প্রতিষ্ঠানটি।
কিন্তু সম্প্রতি হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে ব্যাপকভাবে সমালোচনার শিকার হয় গুগল। মার্কিন সরকারের অভিযোগ, প্রস্তাবিত কিছু প্রতিরক্ষা বিষয়ক প্রকল্প সম্পর্কে এবং উচ্চ পর্যায়ের কয়েকজন নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ সামলানোর ক্ষেত্রে হোয়াইট হাউজের খোলাখুলি সমালোচনা করেছেন গুগল কর্মীরা। সেসব সমালোচনা ‘কনজার্ভেটিভ ভাবধারা বিরোধী’ এবং ‘পক্ষপাতিত্বমূলক’ বলে দাবি হোয়াইট হাউজের।
এ কারণেই নতুন নীতিমালা আনা হলো বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে প্রতিষ্ঠানটির এক মুখপাত্র জেন কাইজার বলেছেন, গুগলের অভ্যন্তরীণ প্ল্যাটফর্মে গত এক বছর ধরে অসৌজন্য বেড়ে যাওয়ায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।