করোনা মহামারীর দুই বছর পর আবার দেখা মিলল ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের চিরচেনা সেই ঈদুল ফিতরের রঙিন উৎসবের। মহান আল্লাহর ক্ষমা ও অনুগ্রহ লাভের প্রত্যাশায় দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনায় আত্মশুদ্ধির পর দিনটি এসেছে আনন্দ আর উৎসব হয়ে।
মঙ্গলবার সকালে ঈদের নামাজের পর সারাদেশেই উৎসাহ-উদ্দীপনায় ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে। রাজধানী ঢাকায় প্রথম ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৭টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে। এরপর সেখানে পর্যায়ক্রমে ৮টা ও ৯ টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়াও সকাল ১০টায় আরেকটি জামাতের পর বেলা পৌনে ১১টায় সেখানে অনুষ্ঠিত হবে শেষ ঈদ জামাত।
করোনা মহামারীর দুই বছর পর হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে সকাল সাড়ে আটটায়। সেখানে আলাদাভাবে ঈদের নামাজ পড়েন নারীরাও।
দেশের বৃহত্তম ঈদ জামাত কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টায়।
সকাল সাড়ে সাতটায় চ্যানেল আই মসজিদ প্রাঙ্গনে ঈদ এর নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও সকাল থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দিনটি উপলক্ষে শুক্রবার থেকে ৩ দিনের সরকারি ছুটি শুরু হয়েছে। সরকারি, আধা-সরকারি ভবন, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি ভবন ও সশস্ত্র বাহিনীর সকল স্থাপনাসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় পতাকা ও ‘ঈদ মোবারক’ খচিত ব্যানার মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ ট্রাফিক আইল্যান্ড ও লাইট পোষ্টে প্রদর্শন করা হচ্ছে। ঈদুল ফিতরে সরকারি ভবনসমূহসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহে আলোকসজ্জা করা হয়েছে।
সারাদেশে বিভাগ বা জেলা, উপজেলা, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ এবং বেসরকারি সংস্থাসমূহের প্রধানগণ জাতীয় কর্মসূচীর আলোকে নিজ নিজ কর্মসূচী প্রণয়ন করে ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে। এছাড়াও বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি গণমাধ্যমসমূহ যথাযথ গুরুত্ব সহকারে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার ও সংবাদপত্রে বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করেছে।
ঈদ উদযাপন উপলক্ষে দেশের সব হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশু সদন, বৃদ্ধ নিবাস, ছোটমনি নিবাস, সামাজিক প্রতিবন্ধী কেন্দ্র, আশ্রয় কেন্দ্র, সেইফ হোমস, ভবঘুরে কল্যাণ কেন্দ্র, দুঃস্থ কল্যাণ ও মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে উন্নতমানের খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশন যথাযথভাবে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে। এ উপলক্ষে সারাদেশে আইন শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
ঈদের দিন সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের বিনা টিকেটে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ও উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন সকল শিশু পার্কে প্রবেশ এবং বিনোদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঈদের দিন সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের বিনাটিকেটে যাদুঘর, আহসান মঞ্জিল, লালবাগের কেল্লা ইত্যাদি দর্শনীয় স্থান প্রবেশ এবং তা প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে শিশুদের ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।