বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির ৭০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে ময়মনসিংহে। ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীকার সংগ্রাম এবং কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ১৯৪৮ সালের ৬ মার্চ এ ভূখন্ডে ভারতের অবিভক্ত পার্টি থেকে পৃথক হয়ে কমিউনিস্ট পার্টি একটি স্বতন্ত্র রাজনৈতিক দল হিসেবে যাত্রা শুরু করেছিল।
দলটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি ময়মনসিংহ জেলা কমিটির সংগ্রামী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পার্টির সর্বস্তরের সদস্য, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ী, নেতা, কর্মীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। শুভেচ্ছাবার্তায় সভাপতি কমরেড এমদাদুল হক মিল্লাত বলেন, ‘৭০ বছরের কমিউনিস্ট পার্টির ইতিহাস সংগ্রামের ইতিহাস। আমাদের দেশে সাম্রাজ্যবাদ–সাম্প্রদায়িকতা–মৌলবাদের বিরুদ্ধে এমন কোন লড়াই নেই যাতে কমিউনিস্ট পার্টির নেতাকর্মীরা সামনের কাতারে ছিলেন না। দীর্ঘ সময়ে অনেক কমিউনিস্টকে হত্যা করা হয়েছে, কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়েছে, ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে। এমনকি পার্টিকে নিশ্চিহ্ন করার চক্রান্ত করা হয়েছে।’
‘তবু কমিউনিস্ট পার্টি কোন অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেনি। তার নীতি ও আদর্শ নিয়ে দীর্ঘ সময় অবিচল থেকেছে, আজও অবিরাম লড়াইয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। যতদিন দেশে শোষণ-বঞ্চনা থাকবে, গরীব-মেহনতি মানুষ তার সংগ্রামকে অব্যাহত গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাবে। শুধুমাত্র গদি পরিবর্তন নয়, নীতি ও আদর্শের পরিবর্তনের মধ্য দিয়েই আমাদের দেশ শোষণমুক্তির সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করবে,’ বলেন তিনি।
পৃথক শুভেচ্ছা বার্তায় দলটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড শেখ বাহার মজুমদার বলেন, ‘এদেশে শত বছর আগে থেকেই কমিউনিস্ট পার্টি কাজ করছে। ১৯৪৭ এর দেশভাগের পর ১৯৪৮ সালের ৬ মার্চ এ পার্টি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এ পার্টি নানকার বিদ্রোহ, টংক আন্দোলন, তেভাগা আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, শিক্ষা আন্দোলন, গণ অভ্যুত্থান, মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে মুক্তিসংগ্রাম পরবর্তী সকল জাতীয় আন্দোলনে অবদান রাখে।’
তিনি বলেন, ‘১৯৫০ সালের ২৪ এপ্রিল খাপড়াওয়ার্ডে ৭ জন কমরেডকে গুলি করে হত্যা করা হয় যা ছিল এদেশের প্রথম কমিউনিস্ট হত্যা। এরই ধারাবাহিকতায় এরশাদের গুন্ডাদের হাতে জীবন দেন প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা তাজুল ইসলাম। ৭১ এ গেরিলা বাহিনী গঠন করে কমিউনিস্ট পার্টি মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখে। আজও এদেশের কৃষক, শ্রমিক, নারি, শিশু, ছাত্র ও যুবদের অধিকার নিয়ে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি।’
সিপিবি’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা শহরের রেলওয়ে স্টেশন চত্বরে বিকাল ৩ টায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।