এই ২৯ অক্টোবরও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টুয়েন্টিতে মাত্র ২৮ বলে ৬২ রান করে অ্যাডিলেড ওভালে উত্তাপ ছড়িয়ে দিয়েছিলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। শুধু ব্যাট হাতে নয়, দুর্দান্ত রানআউটে অবদান রেখে ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডারই ছিলেন মাঠের সেরা অ্যাথলেট।
সফরকারী লঙ্কানদের ১৩৪ রানে হারানোর পর অজি পেসার প্যাট কামিন্স ম্যাক্সওয়েলকে ‘দুর্দান্ত এক ক্রিকেটার’ হিসেবে উল্লেখ করেন, বিশেষ করে টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটে।
কিন্তু দুই দিনের ব্যবধানে ৩১ অক্টোবর অজিদের হেড কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার ঘোষণা করেন, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা মোকাবেলায় ম্যাক্সওয়েল খেলা থেকে ‘অনির্দিষ্টকালের বিরতি’ নিচ্ছেন। যে খবর তার ভক্তদের স্তম্ভিত করে দেয়। তবে সমর্থকরা এটাও প্রার্থনা করছেন যেন তিনি দ্রুত সুস্থ হন এবং মাঠে ফেরেন।
ম্যাক্সওয়েলের এই যন্ত্রণা কি আমাদের অবাক করে দেবে? না। কারণ, ক্রিকেটারদের উপর আজকাল অনেকবেশি চাপ বেড়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় খেলার কারণে প্রায়ই তারা পরিবার থেকে দূরে থাকেন। সেইসঙ্গে অনুরাগী এবং স্পন্সরদের প্রত্যাশা, জনসাধারণের অবিচ্ছিন্ন নজর ও ব্যর্থতার ভয়, এসবকিছু মিলে খেলোয়াড়দের সংবেদনশীলতাকে ক্ষয় করছে। যার চাপ পড়ছে মনোজগতে।
আছে অন্যান্য চাপও। যে দেশগুলোর মধ্যে শত্রুতার ইতিহাস ছিল, তাদের মধ্যকার ক্রিকেট ম্যাচগুলো প্রায়শই ‘যুদ্ধের শ্যুটিংয়ে’ রূপ নিতে দেখা যায়। তাছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এযুগে আধুনিক সময়ের ক্রিকেটারদের জীবন আরও চ্যালেঞ্জিং করেছে। এটা এমনকি তাদের প্রাইভেসির উপরও অত্যধিক খরবদারি করছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একটা বড় দিক হল, এর মাধ্যমে একজন খেলোয়াড় টুইটার, ইনস্টাগ্রাম বা ফেসবুকে অনুরাগীদের দ্বারা হেনস্তা পর্যন্ত হতে পারেন বা হচ্ছেন অহরহ।
ম্যাক্সওয়েল গত বছর একটি সাক্ষাতকারে দুঃখ প্রকাশ করে বলেছিলেন, খেলোয়াড়দের সুস্থতা সম্ভবত এই খেলার সবচেয়ে কম দরের এবং উপেক্ষার দিক। স্বাস্থ্য নিয়ে ম্যাক্সির ওই মন্তব্য ‘ভদ্রলোকের খেলা’ হিসেবে পরিচিত ক্রিকেটের সমস্ত প্রশাসকদের জন্য একটি সতর্কতা হিসাবে কাজ করা উচিত।