মোশতাক আহমেদ, নতুন প্রজন্মের বহুমাত্রিক লেখক। বাংলা সাহিত্যে সামাজিক উপন্যাস, মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস, সায়েন্স ফিকশন, ভৌতিক, গোয়েন্দা, ভ্রমণ, রহস্য, কিশোর সাহিত্য, শিশুতোষ সাহিত্য, প্যারাসাইকোলজি প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে তার বলিষ্ঠ বিচরণ।
গত পনের বছর ধরে তিনি ধারাবাহিকভাবে বছরে পাঁচ ছয়টি উপন্যাস লিখেই চলেছেন। সাহিত্যাঙ্গনে এরকম নিয়মিত এবং ধারাবাহিক লেখক এখন সত্যি বিরল।
মোশতাক আহমেদ এর প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস ছিল জকি। সামাজিক ঘরনার এই উপন্যাসটি ২০০৪ সালের বইমেলায় বিক্রি হয়েছিল মাত্র এক কপি। তারপর তিনি ঝুঁকে পড়েন সায়েন্স ফিকশনের দিকে। ‘রোবটিজম’ ছিল তার প্রথম সায়েন্স ফিকশন।অতঃপর লেখেন ’ক্লিটি ভাইরাস’। দুটো উপন্যাসের পাঠক জনপ্রিয়তা ছিল অসাধারণ। তারপর তিনি সায়েন্স ফিকশনের সাথে রোমাঞ্চ এর মিশ্রণ ঘটিয়ে লিখেন নিহির ভালোবাসা। নিহির ভালোবাসার ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তার কারণে তাকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি।
ক্রিকি, ক্রি, অনুমানব, অমর মানব, দ্যা নিউ ওয়ার্ল্ড, প্রজেক্ট হাইপার, ইলিন, ইডিন, প্রজেক্ট ইক্টোপাস, গিগো, গিপিলিয়া, নিলির ভালোবাসা, রোবো, বায়োবোট নিওক্সসহ প্রায় অর্ধশত সায়েন্স ফিকশন উপন্যাস রচনা করেছেন তিনি। সায়েন্স ফিকশনের সাহিত্য জগতে অনবদ্য অবদানের জন্য ২০১৮ সালে সায়েন্স ফিকশন বা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীতে বাংলা একাডেমি পুুরস্কার লাভ করেন তিনি।
সায়েন্স ফিকশন রচনার ফাঁকে মোশতাক আহমেদ হঠাৎই ঝুঁকে পড়েন প্যারাসইকোলজি উপন্যাসের দিকে। প্রথম উপন্যাস ছিল মায়াবী জোছনার বসন্তে, দ্বিতীয় উপন্যাস জোছনা রাতের জোনাকী।
মনস্তাত্ত্বিক জগতের জটিল আর অজানা রহস্য নিয়ে রচিত এই দুটো উপনাসের জনপ্রিয়তা এতটাই আকাশচুম্বী ছিল যে তিনি ডাক্তার তরফদার নামক একটি চরিত্রই সৃষ্টি করে ফেলেন।
ডাক্তার তরফদার চরিত্র নিয়ে রচিত প্রথম উপন্যাস ‘মন ভাঙ্গা পরি’।অতঃপর লিখেন বৃষ্টি ভেজা জোছনা, ছায়াস্বর্গ, মায়াস্বর্গ, স্বপ্নস্বর্গ, মেঘে ঢাকা জোছনা, নীল জোছনার জীবন।অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, মোশতাক আহমেদ এর এখন সবচেয়ে জনপ্রিয় উপন্যাস হলো ‘প্যারাসাইকোলজি’।
তিনি বলেন, এই সিরিজের পরবর্তী উপন্যাস ‘মন জোছনার কান্না’। বরাবরের মতো ডাক্তার তরফদার থাকবেন মূল চরিত্রে। প্রকাশিত হচ্ছে এই ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসেই।
অনিন্দ্য প্রকাশের স্বত্ত্বাধিকারী আফজাল হোসেন জানান, ‘এটা সত্য, সায়েন্স ফিকশনের চেয়ে মোশতাক আহমেদ এর প্যারাসাইকোলজির বিক্রি এখন অনেক বেশি, পাঠকের সাড়াও মারাত্মক।একজন পাঠক একবার প্যরাসাইকোলজি সিরিজের একটা উপন্যাস পড়লে বাকিগুলো পড়ার জন্য তার মধ্যে তীব্র আগ্রহের সৃষ্টি হয়। এই উপন্যাসগুলো এমনই রহস্যে ভরা যে একবার পড়া শুরু করলে শেষ না করে উঠা যায় না।’
প্যারাসাইকোলজি সিরিজের জনপ্রিয়তার জন্য অনেকে মোশতাক আহমেদকে প্যারাসাইকোলজি যাদুকর বলেও অভিহিত করছেন। তার সৃষ্ট ডাক্তার তরফদার চরিত্রটা সবার কাছে এখন যেমন রহস্যময় তেমনই দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বাংলা সাহিত্যে প্যরাাসইকোলজি উপন্যাসের এই ধারাটি স্থায়ী রূপ পাক, এই কামনা এখন পাঠকদের।