মোবাইল প্রযুক্তির চতুর্থ প্রজন্মে প্রবেশ করলো বাংলাদেশ। সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা ক্লাবে এক জমকালে অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে দেশের চার মোবাইল অপারেটর কোম্পানি গ্রামীনফোন, বাংলালিংক, রবি এবং টেলিটকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের হাতে ৪ জি লাইসেন্স তুলে দেন টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিটিআরসির চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ।
লাইসেন্স প্রদান অনুষ্টানে উপস্থিত থেকে নিজ নিজ কোম্পানির পক্ষে লাইসেন্স গ্রহণ করেন গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাইকেল ফোলি, বাংলালিংকের সিইও এরিক অস, রবি আজিয়াটা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, এবং টেলিটকের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী গোলাম কুদ্দুস।
মোবাইল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান গুলো বলছে এর মধ্যদিয়ে আমরা ইন্টারনেট এক্সপ্রেসওয়েতে প্রবেশ করলাম। এতে করে ইন্টানেটের জগতে প্রবেশ গ্রহকদের আগের মতো অপেক্ষা করতে হবে না। ধীরগতির ইন্টারনেটের যে অভিযোগ ছিলো তাও দূর হবে।
এদিকে, গ্রামীণফোনের সিইও মাইকেল ফোলি লাইসেন্স প্রদান অনুষ্ঠানস্থল থেকেই ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে ৪ জি চালুর ঘোষণা দেন। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানটির ডেপুটি সিইও ইয়াসি আজমান জিপিহাউজে কর্মীদের নিয়ে ৪ জি উদ্বোধন উদযাপন করেন।
বর্তমানে ঢাকার বসুন্ধরা, বারিধারা এবং গুলশান এলাকাসহ চট্টগ্রামের দামপাড়া, খুলশী এবং নাসিরাবাদে ৪ জি সেবা চালু হয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামের আরো এলাকা ৪ জি কাভারেজের আওতায় আসবে। বেশিরভাগ বিভাগীয় শহরে অচিরেই ৪জি চালু হবে।
প্রতিষ্ঠানটি ৩ জির ক্ষেত্রে যেমন করেছিল এবারো একই রকম দ্রুতগতিতে ৪ জি বিস্তার করা হবে। আগামী ছয় মাসের মধ্যেই সব জেলা শহরে ৪জি পৌছে যাবে।
৪ জি সেবা চালু করার সময় গ্রামীণফোনের সিইও মাইকেল ফোলি বলেন, “আজ বাংলাদেশের সবার জন্য একটি গর্বের দিন এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। আমরা গ্রাহকদের সেরা ৪জি সেবা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং আমাদের ৪ জি রোলআউট পরিকল্পনা তা নিশ্চিত করবে।”
এছাড়াও মাইকেল বাংলাদেশে ৪ জি বাস্তবে রূপ দেয়ার জন্য কঠোর পরিশ্রম করায় বাংলাদেশ সরকার, টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং বিটিআরসিকে ধন্যবাদ জানান।
এর আগে গ্রামীণফোনকে ৪জি পরিচালনার লাইসেন্স দেয়া হয়। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি ১৮০০ ব্যান্ড ৫ মেগাহার্জ বেতার তরঙ্গ কেনার ফলে ৪জি/এলটিই বিস্তারের জন্য সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত ব্যান্ডে সর্বাধিক স্পেকট্রাম হাতে পেয়েছে । এই নতুন স্পেকট্রাম এবং বিদ্যমান স্পেকট্রামে প্রযুক্তি নিরপেক্ষতা গ্রামীণফোনকে সেরা ৪ জি সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে একটি শক্ত অবস্থানে পৌঁছে দিয়েছে। প্রযুক্তি নিরপেক্ষতার ফলে গ্রামীণফোন তার ৯০০, ১৮০০ এবং ২১০০ মেগাহার্জ ব্যান্ডের স্পেকট্রামে আরো দক্ষতার সাথে ভয়েস ও ডাটা সেবা দিতে পারবে।
৪জি বিস্তারের সাথে সাথে নেটওয়ার্কের আধুনিকায়নের ফলে গ্রাহকরা এইচডি ভিডিও, লাইভ টিভি স্ট্রিমিং, ঝকঝকে ভিডও কল আর দ্রুতগতির ডাউনলোড উপভোগ করতে পারবেন।
গ্রামীণফোনের ডেপুটি সিইও ইয়াসির আজমান বলেন,“বাংলাদেশে ৪ জি সেবা চালু করতে পেরে আনন্দিত। আমরা বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সাথে গ্রাহকদের কাছে সুলভে এই সেবা পৌছে দিতে কাজ করছি এবং গতকাল দুটি কো-ব্র্যান্ডেড ৪জি হ্যান্ডসেট চালু করার মাধ্যমে তার বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। গ্রাহকদের সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর সাথে সংযুক্ত রাখতে এবং দেশের সেরা ৪জি সেবা দিতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।”
গ্রামীণফোন বাংলাদেশে তার গ্রাহকদের ডিজিটাল জীবনধারাকে এগিয়ে নিতে একটি ইকোসিস্টেম গড়ে তুলছে। ৪জি চালু হওয়ায় দেশের মানুষ এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য গ্রামীণফোন এবং ডিজিটাল উদ্যোক্তাদের আরো অনেক প্রয়োজনীয় সেবা নিয় আসতে সাহায্য করবে।
টেলিনর গ্রুপের অঙ্গসংগঠন গ্রামীণফোনের গ্রাহক সংখ্যা ৬৫ মিলিয়ন এরও অধিক। ১৯৯৭ সালে যাত্রা শুরু করে গ্রামীণফোন। গ্রামীণফোন ঢাকা ও স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত।