মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শিশুদের দণ্ড দেয়া অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মোবাইল কোর্টে শিশুদের দণ্ড দেয়া প্রশ্নে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বুধবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো: মাহমুদ হাসান তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আজ আদালতে উপস্থিত ছিলেন শিশুদের দণ্ডের বিষটি আদালতের নজরে আনা আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম ও আইনজীবী ইশরাত হাসান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
আদালত তার রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন: মোবাইল কোর্টে শিশুদের দণ্ড দেয়ার মাধ্যমে একটা সমান্তরাল (প্যারালাল) বিচার ব্যবস্থা তৈরি করে ফেলা হয়েছে। যেটা সাংবিধান পরিপন্থী। আর ১২১ শিশুকে দেয়া মোবাইল কোর্টের ওই দণ্ড কেবল বেআইনিই নয় প্রকারন্তে অমানবিক সিদ্ধান্ত।
আদালত রায়ে আরও বলেছেন: শিশুদের দেয়া ওই দণ্ড অবৈধ ও বাতিল ঘোষণার ফলে শিশুদের আগামী জীবনে দণ্ডের কোনো প্রভাব পড়ার সুযোগ রইল না। আইনের চোখে তারা নিষ্পাপ।
এর আগে ‘আইনে মানা, তবু ১২১ শিশুর দণ্ড’ শিরোনামে পত্রিকার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো: মাহমুদ হাসান তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের নজরে আনেন চিলড্রেন’স চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুল হালিম ও আইনজীবী ইশরাত হাসান।
এরপর এই হাইকোর্ট বেঞ্চ এবিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিত রুল জারির পাশাপাশি আদেশে দেন। আদালত তার আদেশে ভ্রাম্যমাণ আদালতের (মোবাইল কোর্টের) দেওয়া দণ্ডে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে অন্তরীণ ১২১ শিশুর মধ্যে ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ দেন। এছাড়া ১২ থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত বয়সী শিশুদের সংশ্লিষ্ট শিশু আদালতের সন্তুষ্টি সাপেক্ষে জামিনে মুক্তির নির্দেশ দেয়া হয়।
উচ্চ আদালতের ওই নির্দেশের পরই গত ১১ নভেম্বর ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের মুক্তি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সের মধ্যে থাকা অন্তরীণ শিশুদের জামিন দিয়ে অন্তরীণ অবস্থা থেকে মুক্ত করা হয়।