মেয়েকে হত্যার ঘটনায় মেয়ের জামাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করে পরবর্তীকালে মেয়ের বাবা বলেছেন তার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে, তাই মেয়ের জামাইয়ের অব্যাহতিতে তার আপত্তি নেই।
এমন বাস্তবতায় মামলার আসামিকে জামিন দিয়ে মামলার বাদী তথা মেয়ের বাবার বিরুদ্ধেই মামলার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
ঘটনার বিবরণ থেকে জানা যায়: ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর ঝালকাঠির মেয়ে সাথী আক্তারকে তার স্বামী পটুয়াখালীর মোহাম্মদ কাউসার গাজী হত্যা করেছেন বলে মামলা করে সাথীর বাবা জলিল দুয়ারী। এরপর আসামি কাউসার গাজীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরবর্তীকালে কাউসারকে কারাগারে পাঠান আদালত। পরে এই মামলায় সাথীর পাঁচ বছর বয়সী মেয়ে ফারিয়া আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে বলেন, ‘আম্মুকে আব্বু লাঠি দিয়ে মাথায় এবং দাদা শরীরে আঘাত করে মেরে ছাগলের রশি দিয়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখে।’ অন্যদিকে, ময়না তদন্ত রিপোর্টে আঘাতের ফলে সাথীর মৃত্যুর বিষয়টি উঠে আসে।
একপর্যায়ে এই মামলায় নিম্ন আদালতে জামিন আবেদন করে আসামি মোহাম্মদ কাউসার গাজী। সেই সাথে জামিন আবেদনে মামলার বাদি তথা সাথীর বাবার বক্তব্য সম্বলিত একটি এফিডেভিড যুক্ত করা হয়। সে এফিডেভিডে সাথীর বাবা বলেন, ‘আমার মেয়ে সাথী আক্তারের দুটি সন্তান রয়েছে। আমার মেয়ে সাথী আক্তার তার জামাইকে ভুল বুঝে তার সাথে রাগান্বিত হয়ে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর স্বেচ্ছায় স্বজ্ঞানে অন্যর দ্বারা প্ররোচিত না হয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে। ওই আত্মহত্যায় আমার মেয়ের জামাই ও তার বাবা- মা জড়িত নয়। কিন্তু কিছু কুচক্রী লোকের দ্বারা পরে প্রভাবিত হয়ে তাদের বিরুদ্ধে আমি মামলা করি। আমার মেয়ে জামাই দুটি নাবালক সন্তানের পিতা। তাই ওদের ভবিষ্যতের জন্য এই মামলাটি পরিচালনা করার আবিশ্যকতা নাই। তাই এই মামলা থেকে আসামিকে অব্যাহতি দিলে আমার কোন আপত্তি নাই।’ সাথীর বাবার বক্তব্য সম্বলিত এফিডেভিড দেখে জামিন আবেদনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ আসামি মোহাম্মদ কাউসার গাজীকে জামিন দেন। তবে মামলায় বাদী তথা মেয়ের বাবা জলিল দুয়ারী বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ২১১ ধারায় মামলা করতে পটুয়াখালী সদর থানার ওসির প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়। আদালতে আসামিপক্ষে যুক্ত ছিলেন অ্যাডভোকেট আসাদ মিয়া। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো: বশির উল্লাহ।