বাংলাদেশের মেয়েদের ক্রিকেটের বিবর্তন, সাফল্যের উপর প্রথম ইতিহাসভিত্তিক গ্রন্থ মেয়েরাও পারে-এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান এবং প্রকাশনা উৎসব রোববার রাজধানীর একটি ক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলানামার প্রকাশনায়, মনোয়ার আনিস খান মিনুর গ্রন্থনা এবং ক্রীড়া সাংবাদিক শামীম চৌধুরী সম্পাদিত বইটিতে আছে বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটের শুরু থেকে এ পর্যন্ত প্রতিটি ঘটনার বিবরণ, নেপথ্য ঘটনা, ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লেখা। ঘটনাকালের অসংখ্য ছবি শোভা পেয়েছে এই বইয়ে। ম্যাট পেপারে চার রঙা বইটির মূল্য ধরা হয়েছে ৫০০ টাকা
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কার্যনির্বাহী পরিষদের প্রথম নারী সদস্য মনোয়ার আনিস খান মিনু তার এই গ্রন্থ রচনার প্রেক্ষাপট এবং কারণ উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘এই গ্রন্থে নারীদের সংগ্রাম ও ক্রিকেটের সাফল্যগুলো রয়েছে। এই গ্রন্থ আশা করি নারী ক্রিকেট উন্নয়নে ও নারীদের ক্রিকেটে আগ্রহ বাড়াতে সক্ষম হবে।’
প্রকাশনা উৎসবে গ্রন্থটির উপর আলোচনা করেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি, বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা, বিসিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, পরিচালক এবং এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের সাবেক সিইও সৈয়দ আশরাফুল হক, বাংলাদেশ মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সভানেত্রী রাফিয়া আক্তার ডলি, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক রকিবুল হাসান, জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার শাকিল কাশেম ও ইশতিয়াক আহমেদ।
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমি যখন বিসিবির সভাপতি ছিলাম, তখন মেয়েদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে ক্রিকেটার হিসেবে তৈরি করার শুরুটা করেছিলাম। বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটারদের অর্জিত সাফল্য এখন গর্ব করার মতো। এশিয়ান উইমেন্স টি-টুয়েন্টিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এটা অনেক বড় অর্জন। এশিয়ান গেমসেও নারীদের পদক রয়েছে। সামনে কমনওয়েলথ গেমসে নারী ক্রিকেট অর্ন্তভূক্ত থাকছে। আশা করি সেখানে আমরা পদকের জন্যই যাব।’
সৈয়দ আশরাফুল হক বলেন, ‘নিঃসন্দেহে এটি দারুণ উদ্যোগ। এই বইটি ইংরেজিতে অনুদিত হলে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের নারীদের ক্রিকেট সম্পর্কে জানতে পারবে।’ মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি বিওএ মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা বলেন, ‘এশিয়ান গেমসে ক্রিকেটকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে সোচ্চার ছিলাম। বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশন এ রকম যে কোনো উদ্যোগের সঙ্গে থাকবে। যে কোনো সহায়তা আমরা পাশে থাকব।’
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক রকিবুল হাসান তার বক্তব্যে জানান, ‘১৯৮৩ সালে আমরা পশ্চিমবাংলায় সফর গিয়েছিলাম। তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ-ভারত টেস্ট চলছিল ইডেনে। আমাদের স্বপ্ন ছিল ইডেনে খেলা। ইডেনে গিয়ে আমরা জেনে গর্বিত হই, আমাদের আগে নারীরা ইডেনে খেলেছেন।’
আলোচকবৃন্দ এই গ্রন্থ রচনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরায় মনোয়ার আনিস খান মিনু এবং শামীম চৌধুরীকে ধন্যবাদ জানান। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে বিভিন্ন খেলাধুলার উপর ইতিহাসভিত্তিক গ্রন্থ রচনায় ক্রীড়া গবেষক এবং সংশ্লিষ্ট ক্রীড়া ফেডারেশনসমূহকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।